বিশ্বনাথে জামায়াত নেতা হত্যার ১০ বছর পর মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:২৯:২৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বনাথে ২০১৩ সালে হরতাল চলাকালে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের সংঘর্ষ চলাকালে প্রাণ হারান গোলাম রব্বানী নামে এক জামায়াত নেতা। এ ঘটনার ১০ বছর পর মঙ্গলবার সিলেটের সিনিয়র জ্যুডিশিয়াল ৩নং আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের চাচা মতিউর রহমান।
তিনি উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পাকিচিরি গ্রামের মৃত সাজিদুর রহমানের ছেলে। ওই আমলি আদালতের বিচারক নুসরাত তাসনিম অভিযোগটি আমলে নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রমাপ্রসাদ চক্রবর্তীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী মো. মতিউর রহমান।
মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও ৭২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী মতিউর রহমান তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালের ২০ মার্চ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের পূর্ব ঘোষিত হরতালকে কেন্দ্র করে বিশ্বনাথ উপজেলায় একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন সকালে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে মিছিল চলাকালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়, এতে গোলাম রব্বানীসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরে গোলাম রব্বানীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃতুবরণ করেন।
মামলায় বাদী আরোও অভিযোগ করেন, তার ভাতিজা গোলাম রব্বানীর হত্যাকান্ড ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা, যা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছিল। মামলায় তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আবেদন জানান তিনি।
মামলায় এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (৪৮), দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান. আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আহমদ মতছিন (৫০), পূর্ব জানাইয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে, ছাত্রলীগ নেতা শামীম উরফে চাকু শামীম (৩২), উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আছাদুজ্জামান (৫০), সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ (৫০), যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট (৩৫), রফিক আলী (৪৮), আওয়ামী লীগ নেতা বশির উরফে এংগেল বশির (৪৫), আবদুন নূর (৫০), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নুনু মিয়া, বিশ্বনাথ পৌরসভার কাউন্সিলর ফজর আলী (৩৫), সাহাব উদ্দিন (৪০), যুবলীগ নেতা রফিক আলী (৩৮), নূর উদ্দিন উরফে সাজুর (৩৮), উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সসম্পাদক গিয়াস উদ্দিন (৩৫), আওয়ামী লীগ নেতা মকদ্দুস আলী (৪৫), আইয়ুব আলী (৪০), কালা দুদু (৩২), সাইফুর রহমান (৫৫), আলী আকবর মিলন (৫২), শাহজাহান সিরাজ (৫০), মিজাজুল হোসেন (৪৫), এনামুল হক (৪৫), আবদুশ শহিদ (৪০), সিরাজুল ইসলাম (৪১), ফয়জুর রহমান দুলু (৪২), আহমদ শরীফ (৪৫), আয়না মিয়া (৪৫), রুনুু কান্ত দে (৪৫), ফয়সল আহমদ (৪৩), আরব আলী (৪৩), শংকর চন্দ্র ধর (৩৮), হিরন মিয়া (৩৫), হোসাইন (৩২), জয়নুল আবেদীন (৪৫), যুবলীগ নেতা আবদুল হক (৪০), দবির মিয়া (৩৮), আফরুজ আলী (৪০), রুহেল খান (৩৫), সুহেল মিয়া (৪০), ফয়জুল ইসলাম জয় (৩৮), এরশাদ (৩৮), এনামুল হক (৩৮), মতিন মিয়া (৩৫), ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম রুকন (৩৬), আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ (৫০), ফিরোজ (৫৪), দেলোয়ার হোসেন রুপন (৫২), আবদুর রউফ (৪৫), মবশীর আলী (৪৫), শামসুল হক (৫৫), সুহেল খান (৪০), ইরন মিয়া (৫০), শেখ নূর মিয়া (৫০), রফিজ আলী (৪৫), ফখর উদ্দিন (৪৮), রফিক মিয়া (৫০), বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ (বিপি নং-৬৫৮৮০৫২২৪২), এসআই জিয়া উদ্দিন উজ্জল (বিপি নং ৭৫৯৬০১৬৬০৩), পুলিশ পরিদর্শক রুপক কুমার সাহা (বিপি নং ৬৫৮৯১১৫২৭৫), এসআই মাজহারুল ইসলাম, কন্সটেবল আবু মুসা (কং/৬৬০), কবির হোসেন (কং/৪১২), টিটু সিংহ (কং/১১৫০), তৌফিক (কং/৬৮৭), মোস্তাক (কং/৩৩৮), আব্দুলাহ আল মামুন (কং/৭৮৭), শরিফ উদ্দিন (কং/৭৬৫), কাউছার (কং/৭৩০) ও কৃষ্ণ গোপাল (কং/৬৭)।
তবে বুধবার পর্যন্ত আদালতের আদেশ বিশ্বনাথ থানায় পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রমাপ্রসাদ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, শুনেছি একজনের নিহতের ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এবং বিচারক তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন। আদালতের আদেশ পেলে তদন্তসাপেক্ষে যথাসময়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।