সিলেটের বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:১৪:৪১ অপরাহ্ন
সিলেটে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারা বলেছেন, ‘সনাতন পদ্ধতিতে পাথর আহরণের জন্য কোয়ারি খুলে দিলে লাখো মানুষের জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে বন্যার ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাবে সিলেট। একইসাথে সিলেটের পাথর দিয়ে টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ হবে এবং রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে।’ রোববার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক শাব্বির আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত সাত বছর ধরে সিলেটের লাখো মানুষের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম পাথর কোয়ারিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিবেশের দোহাই দিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পাথর আহরণ বন্ধ করে দেয়ার ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা ভয়াবহ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। লাখ লাখ মানুষ অবর্ননীয় দুঃখ কষ্টে আছেন। সিলেটের প্রান্তিক জনপদে বিরাজ করছে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি।
শাব্বির আহমদ আরও বলেন, বিগত সরকারের মদদপুষ্ট একটি দুষ্টচক্র ও চিহ্নিত সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ ইশারায় সিলেটের লাখ লাখ মানুষের রোজগারস্থল পাথর কোয়ারী বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোয়ারি বন্ধ করে দিয়ে এই চক্র রিজার্ভের ডলার দিয়ে ব্যাপকভাবে পাথর আমদানি করে দেশের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেছে। স্থানীয় পাথর কোয়ারিতে পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় করে পাথর আমদানির ফলে আমাদের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে ঐক্য পরিষদের এই নেতা বলেন, যুগ যুগ ধরে উজান থেকে নেম আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে নেমে আসা রাশি রাশি পাথর। এসব পাথর সংগ্রহ করেই এ অঞ্চলের প্রায় সব মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত। দেশের নির্মাণ শিল্পের অন্যতম উপাদান হিসেবে এ অঞ্চলের পাথর ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
পাথর আহরণ বন্ধ থাকায় প্রতিবছর বন্যার ভয়াবহতা বাড়ছে বলে মনে করেন পাথর ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা। বক্তব্যে পরিষদের সমন্বয়ক বলেন, ঢলের তোড়ে নেমে আসা পাথর ও বালি সঠিকভাবে আহরণের কারণে নদীর নাব্যতাও ঠিক থাকত। ফলে আগে এ অঞ্চলে বন্যার ভয়াবহতা দেখা যায়নি। কিন্তু পাথর আহরণ বন্ধ করে দেওয়ায় সিলেটের নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশনে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এতে প্রতি বছর এ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিচ্ছে।
পাথর কোয়ারি বন্ধ করায় দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন এই নেতা। তিনি বলেন, ‘সিলেটের পাথর কোয়ারী যখন চালু ছিল তখন এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ছিল ব্যাপক। শত শত কোটি টাকা পাথর ব্যবসায় বিনিয়োগ করে লাখ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন। লাখ লাখ বারকী শ্রমিকের উপার্জনের সুযোগ ছিল। পাথর কোয়ারি বন্ধ হওয়ায় এসব মানুষগুলো এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে এখন দেউলিয়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তিনি অবিলম্বে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সিলেটের লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকার পথ সুগম করতে অবিলম্বে পাথর কোয়ারি খুলে দিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর আহরণের সুযোগ দেওয়ার দাবী জানান। বিজ্ঞপ্তি