ব্যবসায়ী-অটোরিক্সা চালক সংঘর্ষে বন্দরবাজার রণক্ষেত্র

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরীতে অবৈধ পার্কিংকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সাথে অটোরিক্সা চালকদের সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেড়টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা ২ ঘন্টার সংঘর্ষে পুরো বন্দরবাজার রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। উভয়পক্ষের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় অন্তত ৪/৫টি দোকান ও ১৫/২০টি সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুর করা হয়। এছাড়া সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৫/২০ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে দোকানের সামনে অবৈধভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা পার্কিং করাকে কেন্দ্র করে নগরীর সিটি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীর সঙ্গে অটোচালকের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় অন্য ব্যবসায়ী ও চালকরা এগিয়ে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ব্যবসায়ীরা বেশ কিছু অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের ধাওয়ায় চালকরা কিছুটা পিছু হটেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিছুক্ষন আবারো চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে ব্যবসায়ীদের দিকে তেড়ে আসে। এতে আবার উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এদিকে এ ঘটনার পর বন্দরবাজারসহ নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা রাস্তার মাঝখানে অটোরিকশা রেখে সড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেন। পরে সেনাবাহিনীর টহল দল গিয়ে অটোরিকশা সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ ব্যাপারে বন্দরবাজার হাসান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোঃ আজিজুল করিম বলেন, এক চালক দোকানের সামনে তার অটোরিক্সা পার্কিং করেন। তখন দোকানদার দোকানের সামনে থেকে সরিয়ে পার্কিং করার কথা বললে ঐ চালকের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন চালক এক হয়ে ঐ ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালায়। তখন অন্যান্য ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই মুহুর্তে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা বেরিয়ে আসলে চালকরা তাদের উপরও হামলা চালায়। এতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষে ৩০/৩৫ জন আহত হয়েছেন। কয়েকটি দোকান ও অটোরিক্সা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের সাথে বসার চেষ্টা চলছে।

সিলেট জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ বলেন, একজন অটোরিকশাচালক সিটি সুপার মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিং করায় ব্যবসায়ীরা মারধর করেন। এতে ওই শ্রমিকের মাথা ফেটে যায়। এ সময় অন্য শ্রমিকরা প্রতিবাদ করতে গেলে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা চালকদের উপর হামলা চালান। এসময় অন্তত ৩০-৩৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে ৩০-৪০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। আহতরা সিলেট এমএজি ওসামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অটোরিকশা চালক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ও দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনা চলছে।