মৌলভীবাজারে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ৫শ কোটি টাকার ক্ষতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:১০:১১ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ও ভারতঘেঁষা মৌলভীবাজার জেলায় লাগাতার পর পর চারবারের বন্যায় প্রায় ৫শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সড়ক বিভাগ, নদী ও হাওর পাড়ের মানুষ ও কৃষি জমির। শুধু সড়ক বিভাগের ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকার।
জানা গেছে, লাগাতার চারবারের বন্যায় মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা, মনূ, ধলাই ও জুড়ী নদে ব্যাপকহারে পানি বৃদ্ধি পায়। এতে তলিয়ে যায় দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি, হাইল হাওর, কাউয়াদিঘীসহ বেশ ক’টি হাওর। বিশেষ করে কুশিয়ারা নদীতে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার নদীপাড়ের প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। কুশিয়ারা নদীতে বাড়িঘর তলিয়ে গিয়ে ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়েছে প্রায় ১শ টি। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার উপরে।
কুশিয়ারা নদীপাড়ের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের তাহিদ আলী বলেন, বানের ঢলে যখন আমরা আক্রান্ত, ঠিক ওই কঠিন সময়ে ক্যান্সারাক্রান্ত ভাই মারা যান। তাকে কিভাবে দাফন-কাফন করাবো টাকা পয়সাও ছিল না। আবার সব জায়গায় থৈ থৈ পানি। দাফনের কোন জায়গা পাচ্ছিলাম না। পরে একটা ব্যবস্থা হয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ওই বিপদের মধ্যেও নদীপাড়ের একমাত্র সম্বল ঘরটিও ধসে পড়েছে। কেউ যদি সাহায্যের হাত বাড়াতেন তবে ঘরটি মেরামত করতে পারতাম।
এদিকে, সদর ও রাজনগর উপজেলায় অবস্থিত কাউয়াদিঘী হাওরে মনূ নদের পাড় ভেঙ্গে পানি ঢুকে সব রূপা আমন তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যায় রাজনগর উপজেলা সদর। এতে রাজনগর বাজারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই বানে হাওরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকার। এছাড়াও মৌলভীবাজার সওজ ও এলজিইডি’র সড়ক তলিয়ে গিয়ে প্রায় ১শ কিলোমিটার সড়ক ধসে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৪শ কোটি টাকার। এছাড়াও নদী পাড় ও হাওর পাড়ের প্রায় ২শ ফিসারি বানের জলে তলিয়ে গিয়ে আরো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকার।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ শুক্রবার এ প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় এ মৌসুমে ৩৯ হাজার হেক্টর রূপা আমন জমি তলিয়ে গেছে।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার হামিদ শুক্রবার এ প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘ বন্যায় আমাদের ৭৫ কিলোমিটার সড়ক তলিয়ে গেছে। ওই সড়কের মধ্যে কিছু ভেঙ্গে গেছে আবার কিছুটা ভেঙ্গে যায়নি। তিনি বলেন, মাটি ভরাটসহ দীর্ঘমেয়াদী সড়কগুলো মেরামত করলে ব্যয় হবে সাড়ে ৩শ কোটি টাকা। আর স্বাভাবিক নিয়মে সড়ক সংস্কার করা হলে খরচ হবে ১২৬ কোটি টাকা। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।