ভারী বর্ষনে ডুবলো কক্সাবাজার, ৬ মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:৪৯:২৫ অপরাহ্ন
সিলেটে দিনভর বৃষ্টি হয়নি, কমেনি তাপমাত্রা
জালালাবাদ রিপোর্ট: টানা ২৪ ঘণ্টার ভারী বর্ষণে ডুবেছে কক্সবাজার শহর। এসময় ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও জেলা সদরে একই পরিবারের ৩ জন করে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হোটেলমালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ভারী বর্ষণ শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। এরপর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণে পুরো শহরের ৮ লাখ মানুষের জীবন অনেকটা থেমে যায়।
গত ৫০ বছরে শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখেননি বলে জানান কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।সিলেট থেকে যাওয়া পর্যটক শাফায়েত শাকিল বলেন, পর্যটন শহরের এমন জলাবদ্ধতা কল্পনা করা যায় না। বৃষ্টির পানি নামার কোনো পথই নেই। সড়কের পাশের নালাগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরা। যে কারণে বৃষ্টির পানি সড়কের ওপর জমে আছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জলাবদ্ধতার কারণে হোটেল-মোটেল জোনের ১৮টি সড়ক ডুবে গেছে জানিয়ে কক্সবাজার হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, আজ (শুক্রবার) ৫ শতাধিক হোটেলে অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক অলস বসে থেকে সময় কাটাচ্ছেন। ভারী বর্ষণের কারণে তাঁরা হোটেল থেকে কোথাও যেতে পারছেন না। অনেকে হোটেল বুকিং বাতিল করে গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছেন।
দীর্ঘ ৫৩ দিন পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সৈকতে পর্যটকের সমাগম ঘটছে। শুক্রবার অন্তত এক লাখ সমাগমের আশা ছিল জানিয়ে হোটেলমালিকরা জানান, বৈরী পরিবেশে অধিকাংশ পর্যটক বুকিং বাতিল করেন।
শুক্রবার সকাল ১০টায় আবার ভারী বর্ষণ শুরু হয়, সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আরও কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে শহরের প্রধান সড়ক, কলাতলী সৈকত সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক ডুবে যায়। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।
কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ বি হান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসের তীব্রতাও বেশি থাকবে, যা দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পেতে পারে। আর এর রেশ পড়তে পারে সিলেটসহ সারাদেশে।
এদিকে, সাগরে নি¤œচাপ এবং কক্সবাজার ও উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঝড়ের প্রভাবে গতকাল সিলেটেও ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়। তবে সারাদিনে একটু বৃষ্টিও হয়নি। ফলে তাপমাত্রাও কমেনি। শুক্রবার কক্সবাজার যখন ভারী বৃষ্টিতে শীতল হাওয়া বাইছে, সিলেটে তখন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ফলে গরম থেকে রেহাই পাননি সিলেটের মানুষ।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সিলেটসহ দেশের ১০ জেলা ও ২ বিভাগে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিভাগে ভারী বর্ষণ হতে পারে। শুক্রবার আবহাওয়া অফিসের দেওয়া আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।