সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:২৬:৫০ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে আ’লীগ নেতা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি’র ভাতিজাকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নিয়োগ বঞ্চিত মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন নামে এক প্রার্থী জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই অভিযোগ করেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এমরানুল ইসলাম রিপন ও আব্দুল মোতালিব।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অফিস সহায়ক পদে মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন প্রথম হন। একই পদে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালিন সভাপতি আ’লীগ নেতা আব্দুল হাকিম রাজ’র ভাতিজা শাহান আহমদসহ আরও ৩জন অংশগ্রহণ করেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা অফিস সহায়ক পদে মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন’কে চূড়ান্ত করার জন্য বলেন। কিন্তু অফিস সহায়ক পদে সভাপতির ভাতিজা’কে নিয়োগ দেয়ার জন্য নিয়োগ বোর্ডের উপর চাপ প্রয়োগ করেন ওই আ’লীগ নেতা। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ নিয়োগ চূড়ান্ত করার জন্য পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিসার একাধিকবার বললেও উত্তীর্ণদের চূড়ান্ত করা হয়নি। নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে ফের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। দ্বিতীয়বার নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয় ৩ আগস্ট। তখন সারাদেশে ছাত্র আন্দোলন চললেও তাড়াহুড়া করে পরীক্ষা নেয়া হয়। ওই দিনও মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন ভালোভাবে উত্তর লেখার পরেও নিয়োগ বোর্ড প্রভাবিত হয়ে সভাপতির ভাতিজা শাহান আহমদকে চূড়ান্ত করেন।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এমরানুল কবির রিপন ও আব্দুল মোতালিব বলেন, কয়েকবার আবেদন করে অনেক টাকা খরচ করেছি। পরীক্ষা ভালো হওয়ার পরেও চাকুরি হয়নি। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে তৎকালিন সভাপতি আ’লীগ নেতা আব্দুল হাকিম রাজের ভাতিজা শাহান আহমদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা এ নিয়োগ বাতিল দাবি করছি।
সাবেক সভাপতি আব্দুল হাকিম রাজ এ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, প্রথম পরীক্ষার প্রশ্ন জেলা শিক্ষা অফিসার নিজে একা রেডি করে নিয়ে আসায় আমরা এ নিয়োগ বাতিল করেছি। এনিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের আমি সদস্য ছিলাম, তবে আমি প্রভাবিত করিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইমাম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ আমিও পেয়েছি। বিষয়টা নিয়ে আমরা বসবো। পূর্বের নিয়োগ বাতিল হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার প্রশ্ন তৈরি করে নিয়ে আসার কারণে বাতিল হয়েছে। তখন জেলা শিক্ষা অফিসার ও তৎকালীন সভাপতির মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
রাজনগর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো: জুলফিকার আলম বলেন, অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, প্রথম নিয়োগ পরীক্ষার সদস্য হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চূড়ান্ত নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিকে বলে আসি। কিন্তু কমিটি ও প্রধান শিক্ষক এদের নিয়োগ দেননি। পরবর্তী নিয়োগে আমি ছিলাম না। যেহেতু এ নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তাই আমি চূড়ান্ত অনুমোদন দেব না।