হাসিনার পতন বিএনপির ১৫ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের চুড়ান্ত ফল -সিলেটে আযম খান
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:২৪:১৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছেন, ৩৬ দিনের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়নি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন বিএনপির দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের চুড়ান্ত ফলাফল। ছাত্রদের ডাকে বিএনপিসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। যার ফলে খুনী হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই আন্দোলনে নিহতের সাড়ে ৮ শতাধিক শহীদের মধ্যে ৪২২ জন ছিল বিএনপির নেতাকর্মী।
তিনি বলেন, বিএনপির গত ১৫টি বছর ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করে আসছে। বিএনপির আন্দোলন দমিয়ে রাখতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার জননেতা এম. ইলিয়াস আলীসহ দলের ৫২২ জন নেতাকর্মীকে গুম করেছে। বিএনপির ১০ হাজার নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। জালিম হাসিনার রোষানলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন ১০ লক্ষ নেতাকর্মী। এরপরও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি রাজপথ ছাড়েনি। তারেক রহমান বিলেতে থেকেও ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা বাংলাদেশের সাথে যুক্ত ছিলেন। এরই ফসল হিসেবে ৫ আগস্ট স্বৈরশাসকের চরম অধপতন ঘটেছে। তাই এই অর্জনকে আমরা বৃথা যেতে দেবো না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা দীর্ঘদিন চলতে থাকবে। নির্বাচিত সরকারও সংস্কার করতে পারবে। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালিন সরকারকে মৌলিক সংস্কার শেষ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। এদেশের মানুষ ভোট দিতে অপেক্ষা করছে। কারণ গত ১৫ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেনি।
তিনি মঙ্গলবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা মাঠে সিলেট বিভাগ বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় র্যালীপুর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি সিলেটের প্রয়াত গুণীজনকে স্মরণ করে বলেন, শহীদ জিয়া সিলেট সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তারেক রহমান সিলেটের জামাই। তাই জিয়া পরিবারের সাথে সিলেটের সম্পর্ক অনেক গভীর। সিলেট বিএনপির ঘাঁটি। এখানে শাহজালাল ও শাহপরান সহ অনেক ওলী আউলিয়া শুয়ে আছেন। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানী ছিলেন সিলেটের সন্তান। এছাড়া প্রয়াত রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খান, এম সাইফুর রহমান, হারিছ চৌধুরীও সিলেটের সন্তান। আমরা তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি ও রুহের মাগফেরাত কামনা করি। নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীসহ গুমকৃত সকল নেতাকর্মীদের সন্ধান চাই।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদী লুনা, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি.কে গৌছ, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, হাজী মুজিব, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল ইসলাম, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়জুল করিম ময়ুর ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ওলামাদল সিলেট জেলার আহবায়ক মাওলানা নুরুল হক।
দুপুর থেকে দলটির নেতাকর্মীরা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হওয়া শুরু করলেও বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মূল কার্যক্রম। বেলা ২টার দিকে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা মাঠ। সমাবেশে শেষে আলিয়া মাদারাসা মাঠ থেকে বিশাল র্যালি শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ শেষে নগরীর ঐতিহাসিক রেজিষ্ট্রারি মাঠে গিয়ে শেষ হয়।