সোনাই নদীতে বালু উত্তোলনের মচ্ছব
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:৩১:২৩ অপরাহ্ন
ছাতক প্রতিনিধি:
ছাতকের সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের সোনাই নদী থেকে বালু উত্তোলনে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। সীমান্ত ঘেঁষা সোনাই নদীতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বালুখেকোদের এই আগ্রাসন।
মাঝেমধ্যে প্রশাসনের তৎপরতায় বালু উত্তোলন বন্ধ হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো একই কায়দায় শুরু হয় বালু উত্তোলন। তবে দিনের চেয়ে রাতেই বালু উত্তোলনের উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে এ মহলটি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক লোকজন জানান, শুকনো মৌসুমে সোনাই নদীর বুকজুড়ে ভেসে উঠে বালুচর। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর নদীর কয়েক কিলোমিটারজুড়ে পরিণত হয় বালু মহালে। আর এ সময়টিতে সোনাই নদীতে চলে বালু উত্তোলনের উৎসব।
সোনাই নদী থেকে বালু উত্তোলনে কোন ইজারা বা অনুমতি না থাকায় প্রভাবশালীরা স্থানীয় আধিপত্য ব্যবহার করে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে থাকে বিনা বাঁধায়। ফলে হুমকীর মুখে পড়ে নদীর দু’পাড়, উভয়পাড়ের কৃষি জমি ও সোনাই নদী রাবারড্যাম প্রকল্প।
বৈশাকান্দি-বাহাদুরপুর মৌজায় কৃষি জমি সেচ প্রকল্পের আওতায় আনতে ২০১২ সালে সোনাই নদীতে প্রতিষ্ঠিত হয় রাবারড্যাম। রাবার ড্যামের পরবর্তি সীমান্তের দিকের অংশই মুলত বালু মহাল। বালু মহালের একপাড় ছাতক এবং অন্যপাড় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। বর্তমানে দেশে রয়েছে প্রচুর পরিমানে বালুর চাহিদা। ঘনফুট হিসেবে বিক্রি হওয়া বালুর মূল্য দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর সীমান্ত অঞ্চলের বসবাস করা কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি।
আইনের চোখ ফাঁকি দিতে দিনের চেয়ে রাতের আঁধারেই বালু উত্তোলনের পথ বেছে নেয় এ চক্র। সন্ধ্যা নামার সাথে-সাথেই সারি সারি বারকি নৌকা বালু মহালে হানা দেয়। বারকি নৌকা ভর্তি করে আনা বালু রাবারড্যাম এলাকায় বড় নৌকায় আনলোড করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতি বারকি থেকে দুই থেকে তিন হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে ওই প্রভাবশালী চক্র।
বিগত সরকারের আমলে সোনাই নদীতে যারা বালু উত্তোলন ও বিক্রির রাজত্ব কায়েম করেছিল এখন তাদের আর দেখা মিলছে না। তবে বালু উত্তোলন থেমে থাকেনি। শুধু হাত বদল হয়েছে। বালু উত্তোলনে চাঁদা দেয়া নিয়ে সম্প্রতি বারকি শ্রমিক ও চাঁদা আদায়কারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বারকি শ্রমিকরা মনে করেন যেহেতু সোনাই নদী বালু মহাল সরকারীভাবে কোন লিজ প্রদান করা হয়নি, সেহেতু তারা কাউকে চাঁদা না দিয়েই বালু উত্তোলন করতে পারবে।
সরকারী সম্পদ রক্ষায় আইনী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।