জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে ইনোভেশন মেলা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:১০:২০ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে দিনব্যাপী ‘ইনোভেশন মেলা-২০২৪’ আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় জেসিপিএসসি’র মাল্টিপারপাস শ্যাডে ইনোভেশন মেলার উদ্বোধন করেন জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ লে. কর্নেল তাহিয়াত জালাল চৌধুরী, পিএসসি।
ইনোভেশন মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেসিপিএসসি’র পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফারুক আহমেদ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। ইনোভেশন মেলা সকল অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল উন্মুক্ত। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণে ইনোভেশন মেলার প্রাঙ্গণে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, একসময় প্রকৃতির হাতে মানুষ ছিল খেলার পুতুল। সেই প্রকৃতিকে জয় করার প্রয়োজনেই পৃথিবীর নানা ব্যক্তি মানব-কল্যাণের জন্য ডুব দিয়েছিলেন প্রকৃতির অতলান্ত রহস্য সাগরে। সেই রহস্যবরণ উন্মোচন করে মানুষ উদ্ভাবন করেছে প্রকৃতির গোপন সম্পদ ও শক্তি। জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে মানুষের আজ দুর্বার গতি। নিত্যনতুন উদ্ভাবনে মানুষ আজ সমৃদ্ধশালী। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাচেতনা, জীবনের স্বপ্ন ও কল্যাণের পরিবর্তন ঘটিয়েছে উদ্ভাবনী শক্তি। উদ্ভাবন হচ্ছে কোন নতুন কাজের নীতি, পরিচালনার কৌশল, কর্মসূচি, নতুনত্বের অভিযাত্রিক ধারণা, পণ্য, সেবা, উৎপাদন পদ্ধতি, নির্মাণ কৌশল ইত্যাদি সৃষ্টির প্রক্রিয়া। সহজ কথায় উদ্ভাবনী ক্ষততার বাস্তবিক উপস্থাপনই হচ্ছে ইনোভেশন। জ্ঞান উদ্ভাবনের জন্ম দেয়, উদ্ভাবন জন্ম দেয় উৎপাদনশীলতা আর উৎপাদনশীলতা প্রবৃদ্ধির দিকে ধাবত করে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেন, তোমাদের অনুসন্ধিৎসু হতে হবে। তোমরা লেখাপড়ার পাশাপাশি বিশ্লেষণধর্মী ও বাস্তবসম্মত বিজ্ঞানচর্চার মাধ্যমে নিজেকে একজন উদ্ভাবক হিসেবে গড়ে তুলবে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য মনুষ্যত্বের জাগরণ। সৎ ও অসত্যের এবং ভালো ও মন্দের পার্থক্য নির্ণয় করার আত্মোপলব্ধি। বিজ্ঞান শিক্ষা একটি বিশেষ ধরনের শিক্ষা হলেও শিক্ষার মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছিন্ন নয় বরং বিজ্ঞান শিক্ষার বিশেষ দিক হচ্ছে যা মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষরূপে জানতে সহায়তা করে। তোমরা হবে সকল অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কারমুক্ত আধুনিক মনের শুদ্ধ মানুষ।
শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মেলায় ৭৭টি প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়। তাদের নতুন নতুন ধারণার সুনিপুণ উপস্থাপনে আগত সবার মাঝে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। বিচারকম-লি শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট উপস্থাপন ও বর্ণনা শুনে বিচারকার্য পরিচালনা করেন। প্রজেক্ট উপস্থাপনকারী ৪টি গ্রুপের মধ্যে ১২টি প্রজেক্টেকে সেরা প্রজেক্ট ঘোষণা করে মোট ১৪টি পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এছাড়া জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দেবজ্যোতি দাস সৌম্য ২০২৪ সালে মিশরে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড’ এ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গোল্ড মেডেল পাওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিঞ্জিনী তালুকদার ‘জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতায় আবৃত্তি বিষয়ে সিলেট বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করার গৌরব অর্জন করে। প্রধান অতিথি তাদেরকে পুরষ্কার প্রদান করেন।
জেসিপিএসসি’র উপাধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যাপক শারমীন আকতার এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় ইনোভেশন মেলার বর্ণিল আয়োজনের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জীববিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক রহমতুন্নেছা কোরেশী এবং সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি