শান্তিগঞ্জে বীরগাও হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮:৫৮:২১ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের সচেতন নাগরিকবৃন্দের পক্ষে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের উপপরিচালক, জেলা প্রশাসক ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা কমিটিকে না জানিয়ে নিজে ভুয়া ভাউচার তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন। সর্বশেষ পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনের(চইএঝও) আওতায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এই অনুদানের অর্থ ব্যয়ের খাতসমূহ নিশ্চিতকরণে সরকারি বিধি মোতাবেক নির্ধারিত ৫টি খাতে ব্যয় করে বিল ভাউচার প্রস্তুত করার কথা থাকলেও নির্ধারিত তিনটি তারিখেও তিনি তা দিতে ব্যর্থ হন। তবে জাল ভাউচার ও ভূয়া রেজুলেশন প্রদান করার খবর রটলে বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা বিষয়টি সঠিক কিনা যাচাই করার চেষ্টা করেন। পরে তারা এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি কিছু জানেন না বলে তথ্যদিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা প্রশ্নে অটল থাকলে তিনি জানান বিদ্যালয়ের সভাপতি সব জানেন। পরে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী একটি সভার আয়োজন করলে প্রধান শিক্ষক ৫ লক্ষ টাকার হিসেব দেন। এতে ১ লক্ষ টাকার হিসেব মিললেও বাকি টাকার কোন হিসেব পাননি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এতে এই বিশেষ অনুদানের ৪ লক্ষ টাকাই আত্মসাৎ করার অভিযোগ করছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।
তারা ধারণা করছেন স্কুলে যোগদানের পর থেকে অন্তত ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি, রেজিস্ট্রেশন, সেশন ও ফরম ফিলাপ বাবদ লাগামহীন বাড়তি টাকা আদায় করেন। এই টাকা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে থাকার কথা থাকলেও তিনি তার নিজের একাউন্টে রাখেন। তিনি ৩০ কি.মি দূরে জেলা শহরে বসবাস করায় ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে। প্রতিবছরই বিদ্যালটিতে ফলাফল খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়ার ৪ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ও অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সচেতন এলাকাবাসী এমন অভিযোগ দাখিল করেছেন।
সচেতন নাগরিকবৃন্দের পক্ষে সাবেক শিক্ষার্থী আজমল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি তার ইচ্ছেমত সকল কাজ পরিচালনা করেন। সর্বশেষ তিনি বিশেষ বরাদ্ধের ৫ লক্ষ টাকা মধ্যে ৪ লক্ষ টাকাই আত্মসাত করেছেন। আমরা এই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাই।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া বলেন, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই আমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের এই ভিত্তিহীন অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের সাথে আমি জড়িত না।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়ার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।