আগস্টে সড়ক-রেল-নৌপথে ঝরলো ৫৩৪ প্রাণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:২৯:২২ অপরাহ্ন
সিলেটে ৩৫ দুর্ঘটনায় ৩৪ মৃত্যু
জালালাবাদ রিপোর্ট : গত আগস্ট মাসে সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪৯০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর এসব দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত ও ৯৮৯ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত দুর্ঘটনার খবরের ভিত্তিতে সংগঠনের সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত আগস্ট মাসে দেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত ও ৯৮৫ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ১০টি দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ৫০ জন নিহত, ২ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
গত মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঢাকা বিভাগে ঘটেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ওই বিভাগে ১১৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় ১২১ জন নিহত ও ২৬১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে। এই বিভাগে ২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৯৩ জন আহত হয়েছেন। আর সিলেটে ৩৫ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩৪ জন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ৯০ জন চালক, ৭৫ জন পথচারী, ৩৯ জন পরিবহনশ্রমিক, ৫৪ জন শিক্ষার্থী, ৬৬ জন নারী, ৪৯টি শিশু, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১২ জন নেতা–কর্মী, ৩ জন সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১ জন সদস্য, ১ জন শিক্ষক, ১ জন আইনজীবী রয়েছেন।
এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন ৭৬ জন পরিবহনচালক, ৭৪ জন পথচারী, ৫৫ জন নারী, ৪৩টি শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ১৭ জন পরিবহনশ্রমিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ১১ জন নেতা-কর্মী, পুলিশের ১ সদস্য, ১ জন শিক্ষক, ১ জন সাংবাদিক ও ১ জন আইনজীবী।
সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে ৩১ শতাংশের বেশি ছিল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, ২১ শতাংশের বেশি ছিল ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি আর বাস দুর্ঘটনাটি ছিল ১০ শতাংশের বেশি।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪১ দশমিক ৫৪ শতাংশ ছিল গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত মাসে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৯ দশমিক ১৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
আগষ্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনার কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে, তা হলো: ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতির সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল, সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি, মহাসড়কের নির্মান ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো ইত্যাদি।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ :
জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা । জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান। ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা। সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা। মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা। সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা। উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।