সড়ক বাড়ছে হকারের সংখ্যা, প্রশাসনের ঢিলেঢালাভাবে ক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:২২:০৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: অভিযান-আল্টিমেটাম কোনো কিছুতেই সড়ক ও ফুটপাত থেকে সরছে না হকাররা। দিন যত যাচ্ছে হকারের সংখ্যাও বাড়ছে। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের ঢিলেঢালা ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ছেন পথচারী ও আশপাশের দোকানীরা।
হকারদের কারণে গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে বন্দরবাজারে যানবাহনের ঝট দেখা যায়। ফলে প্রচন্ড গরমের মাঝে মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় দিগুণ। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সিলেটে সেই যে হকারদের রাজত্ব শুরু হয়েছে এরপর তা আর থামেনি। যদিও চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে কোনো হকার ফুটপাত ও রাস্তায় বসতে পারবে না বলে ঘোষণা দেয় নগর কর্তৃপক্ষ কিন্তু তার বাস্তব কোনো প্রভাব এখনো চোখে পড়েনি। মাঝেমধ্যে সিসিকের পক্ষ থেকে অভিযানের দাবি করা হলেও হকাররা বহাল তবিয়তে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। দিন যত যাচ্ছে তাদের বিস্তার ততই বাড়ছে। এই প্রেক্ষিতে অবস্থা এখন এমন দাড়িয়েছে হকার আর সিএনজি চালিত অটোরিকশার দখলেই নগরীর অধিকাংশ ব্যস্ত রাস্তা ও ফুটপাত। তারা দয়া করে অল্প যে একটু জায়গা দখল করেননি তা দিয়ে যানবাহন ও পথচারীদের ভাগাভাগি করে চলাচল করতে হচ্ছে।
গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে ক্বীনব্রিজের উত্তরপ্রান্ত থেকে শুরু করে বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা-আম্বরখানা, লামাবাজার, তালতলা, সোবহানীঘাট সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব রাস্তা এবং ফুটপাতই দখল করে পুরানো দিনের মতো ব্যবসা শুরু করেছেন হকাররা। পেঁয়াজ রসুন থেকে তরকারি, ফলমুল এবং কাপড়চোপড় সব বিক্রি করছেন তারা।
এরআগে সাবেক দুই মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় নগরীর লালদীঘিরপার হকার্স মার্কেটে তাদের পুণর্বাসন করা হয়েছিল। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচিত হওয়ার পরপর লালদীঘিরপারে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির পর সেখানেই বসতে শুরু করেছিলেন হকাররা। এতে ফুটপাত ও সড়ক হকারমুক্ত হয়। তবে ৫ আগস্টের পর কার্যত কোনো প্রশাসন না থাকায় সেই সুযোগে হকাররা শেড ছেড়ে আবার রাস্তায় বেরিয়ে আসে। ইতিমধ্যে সারাদেশের মতো সিলেটের মেয়রও বরখাস্ত হন। এরপর মেয়রের জায়গায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীককে দায়িত্ব দেয় সরকার।
হকারদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে নগরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। অবশেষে গত মাসের শেষ দিকে প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণাধীন সিটি কর্পোরেশন হকারদের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে কঠোর বার্তা প্রদান করে। বলা হয়- মহানগরের সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে পুলিশ প্রশাসন ও ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নামবেন সিটি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তি, দু-তিন দিন মহানগরে মাইকিংও করা হয়।
ঘোষণা অনুযায়ী ১ সেপ্টেম্বর আবু আহমদ ছিদ্দীকীর নেতৃত্বে অ্যাকশনে নামে সিসিক কর্তৃপক্ষ। তবে ছাত্র-জনতা সঙ্গে ছিল না। অভিযানে সহযোগিতা করে সেনাবাহিনীর একটি টিম। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় নগর ভবন প্রাঙ্গণ থেকে অভিযান শুরু করে সিসিক, বিকালে আম্বরখানায় গিয়ে শেষ হয়। এ দিনই শুধু অনেকটা হকারমুক্ত দেখা যায় মহানগর। কিন্তু দু-তিন দিন পর অবস্থা আগের মতো হয়ে যায় এবং বর্তমানে তা-ই দৃশ্যমান।