১০ বছরে দাখিল পাশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:৩০:০০ অপরাহ্ন
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি:
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, অথচ দাখিল পাশ করেছেন মাত্র দশ বছর বয়সে। এমন অভিযোগে আগে একবার হয়েছে তদন্তও, সেই তদন্তে পার পেয়ে যান সেই অধ্যক্ষ। তবে এবার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী আবারো এই অভিযোগের পুনঃতদন্ত চেয়ে সিলেট জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
এলাকাবাসীর দাবী, আগের অভিযোগের তদন্ত রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সঠিকভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় তারা পুনঃতদন্ত করার আবেদন করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসাবে আব্দুল আলিম ২০০৮ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অধ্যক্ষ মো: আব্দুল আলীম মাত্র ১০ বছর বয়সে দাখিল পাশ করেছেন মর্মে নিয়োগকালীন সময়ে তার সনদ জমা দিয়েছেন। তার জমা দেয়া সনদ অনুযায়ী ১৯৬৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করে ১৯৭৯ সালে দাখিল পাশ করেন। এরপর ১৯৮১ সালে আলীম, ১৯৮৩ সালে ফাজিল ও ১৯৮৫ সালে তিনি কামিল পাশ করেন। এছাড়াও একটি ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে যে ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন, নিয়োগকালীন সময়ে তাও তার ছিলনা। অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে তার জমা দেয়া অভিজ্ঞতার সনদও সঠিক নয়। গত ১৮ বছর থেকে তিনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী এবং সরকারি সুবিধাভোগীদের নিয়ে মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এই মাদ্রাসা পরিচালনায় অধ্যক্ষ মো: আব্দুল আলীম গত প্রায় দেড় যুগ থেকে ব্যক্তিগত বিধি, অতি রাজনীতিকরণ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ক্রমশ: অন্ধকারে নিয়ে গেছেন। যা এলাকাবাসীসহ স্থানীয় শিক্ষানুরাগী সচেতনমহলে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
সরেজমিনে মাদ্রাসায় গেলে দেখা যায়, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যার সাথে উপস্থিতির আকাশপাতাল পার্থক্য। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ তথ্য দিতেও অনীহা প্রকাশ করে। মাদ্রাসায় কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, সব ঠিক আছে তবে একটি মহল মাদ্রাসার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করতে চায়। তবে ছাত্র উপস্থিতির ব্যাপারে কথা বললে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।
আনোয়ার হোসেন নামের একজন শিক্ষক প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন, পাশের হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ভর্তি দেখানো হয় এই মাদ্রাসায় এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে এদের পাশ করানো হয়। এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন সিলেটের ফুলতলী বাড়ির সংগঠন আল ইসলাহ না করায় তাকে বিভিন্ন ধরনের মানসিক নির্যাতন করেন এখানকার দায়িত্বশীলরা।
অভিযোগের ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুল আলিমের বক্তব্য চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, ১০ বছরে দাখিল পরীক্ষার বিষয়ের অভিযোগ তদন্ত হয়ে একটি পরিপত্রের মাধ্যমে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উঠা অন্যান্য অভিযোগের কথা তিনি অস্বীকার করেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগের কথা তিনি উড়িয়ে দেন।