বড়লেখায় তহশিলদারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:৩৩:২৯ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি :
বড়লেখা সদর ভূমি অফিসের তহশিলদার রীতিমত ফাঁদ পেতে ঘুষ আদায় করছেন। ভূমি মালিকদের সাথে রফাদফা হলেই যৎ সামান্য ভূমি উন্নয়ন করের রশিদ কাটেন। তার ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপারে রোববার শরিফুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগি ভূমি মালিক জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলার ভুগা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদারের বিরুদ্ধেও ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সিস্টেম চালুর পর থেকে তহশিলদারদের খাজনা অনুমোদন করতে হয়। বড়লেখা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মোহাম্মদ মজিদ মিয়া খাজনা দিতে আসা লোকদের নানা অজুহাতে হয়রানি করেন। ভূমি ক্রয়-বিক্রয়ে নামজারি পর্চা ও খাজনা পরিশোধের রশিদ বাধ্যতামূলক হওয়ায় খাজনা পরিশোধ করতে গেলে প্রথমে বিরাট অঙ্কের টাকার সমন্বয় করে দেন। বড়লেখা সদরের তহশিলদার মোহাম্মদ মজিদ মিয়া ও ভুগা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার পংকজ তালুকদার দর কষাকষির পর যৎ সামান্য টাকার ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেন। অন্যান্য উপজেলায় ‘আগে নামজারী পরে খাজনা’ পরিশোধের নিয়ম থাকলেও মজিদ মিয়া বড়লেখায় যোগদান করেই এসিল্যান্ডকে প্রভাবিত করে ‘আগে খাজনা পরে নামজারি’ প্রথা চালু করেন। এতে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন ভূমি মালিকরা। একজন ব্যক্তি একটি খতিয়ান থেকে ৫ শতাংশ জমি কিনলে তাকে খাজনা পরিশোধ করতে হচ্ছে এসএ খতিয়ানের মালিকের নামে থাকা ১০/১৫ একর ভূমির। আবার দরকষাকষি চূড়ান্ত হলে আংশিক ভূমির খাজনা কেটে রশিদ দেন। অন্যদিকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে খাজনা পরিশোধ ছাড়াও নামজারীর ব্যবস্থা নেন।
ভুক্তভোগি শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কাঠালতলী মৌজার ৮৩৫ নং খতিয়ানের ভূমির খাজনা কাটতে ৯ সেপ্টেম্বর অনাইলে দেখেন ১৪২৮ বাংলা পর্যন্ত মোট দাবি ৩৭৭১ টাকা। ১৪২৯ থেকে ১৪৩১ বাংলা পর্যন্ত ৩ বছরের খাজনা পরিশোধ করতে তহশিল অফিসে গেলে তহশিলদার মোহাম্মদ মজিদ মিয়া তাকে ৮৫ হাজার ৬৭৪ টাকার খাজনা অনুমোদন করেন। মাত্র তিন বছরে এত বড় অঙ্কের খাজনা শুনে তিনি বিস্মিত হন। শরিফুল ইসলাম জানান, তহশিলদার প্রথমে এভাবে বড় অঙ্কের হিসাব দিয়ে পরে ঘুষ নিয়ে কম অঙ্কের খাজনা কাটেন। তিনি তার সাথে কম্প্রোমাইজে না গিয়ে রোববার জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলার ভুগা তহশিল অফিসের আওতাধীন ভূমি মালিকরা অভিযোগ করেন, সেখানেও খাজনা পরিশোধ করতে যাওয়া ব্যক্তিদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। অনেকে বিরাট অঙ্কের খাজনার হিসাব শুনে তা পরিশোধ না করেই ফিরে যান। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।
বড়লেখা সদর ইউনিয়নের সহকারি তহশিলদার মোহাম্মদ মজিদ মিয়া জানান, তিনি খাজনা রশিদ কাটেন না। তথ্য কেন্দ্র থেকে অনলাইনে খাজনা রশিদ কাটা হয়। তিনি সব গ্রাহকদের বলেন, রশিদ নিয়ে আসতে। তখন তিনি সমন্বয় করে দেন। তিনি কাউকে হয়রানি করেন না, ঘুষ দুর্নীতির সাথেও জড়িত নন। জনবল কম থাকায় কাজের চাপে আগে মাঝেমধ্যে রাতে অফিস করেছেন। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে রাতে অফিস করেননি।