প্রশাসনিক রদবদলের ধরনে বিএনপির অসন্তোষ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:৫৭:১৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বিভিন্ন প্রশাসনিক রদবদলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলের নেতাদের অভিযোগ, ফ্যাসিবাদের দোসরদের ঘুরেফিরে পদায়ন করা হয়েছে, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠরাই এখনও বিভিন্ন পদে রয়ে গেছেন। ওইসব কর্মকর্তা সাময়িক ‘রং বদল’ করলেও যে কোনো সময় ‘আগের রূপে’ ফিরে আসতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বেশ কিছু জেলা প্রশাসকের রদবদলে স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া নেতারা মনে করছেন, স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করা হলেও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ক্ষেত্রে ভিন্ন নীতি বর্তমান সরকারের। দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই পালিয়ে বা আত্মগোপনে রয়েছেন। এতে ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবা পেতে গেলে জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোথাও কোথাও চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা আরও ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থায়ী কমিটির নেতারা।
বৈঠকে দলটির নেতারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয় বরং ক্যাম্পাসে ইতিবাচক রাজনীতির ধারা চালু করতে চাই। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, দেশ গঠনে ছাত্র রাজনীতির ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৬২ সালের পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা, ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির বড় ভূমিকা রয়েছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম, স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি অঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির নেতারা। বৈঠকে কেউ কেউ মত দেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ইন্ধনে তার দোসররা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। পাহাড়ে হঠাৎ অস্থিরতা কেন হচ্ছে, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এর পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্তর্র্বতী সরকারকে কঠোর হাতে সন্ত্রাসীদের দমন করার পরামর্শ দেন কেউ কেউ।
সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে এ বৈঠক শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক শেষ হয় রাত ১১টার দিকে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান (ভার্চুয়ালি), মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (ভার্চুয়ালি), সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টু কু (ভার্চুয়ালি), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীরবিক্রম) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।