ছোটখাটো কারণে অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না : বিমানবন্দরে মাহমুদুর রহমান
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:০১:৩৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের কবর হয়েছে। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু সেটা যেন চিরদিনের জন্য হয়। যারা ছাত্র-জনতা সমন্বয়ে লড়াই করেছেন, তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আপনারা ছোটখাটো কারণে অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না।
শুক্রবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় পুরো টার্মিনাল লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। শিক্ষক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার কয়েক হাজার লোক মাহমুদুর রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমান বন্দরে সমবেত হয়।
এর আগে তিনি শুক্রবার সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে বিমানবন্দরে নেমে টার্মিনাল-২ দিয়ে বের হয়ে একটি মিনি ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে দৈনিক আমার দেশ পরিবারসহ অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এসময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ আমির ডা. শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো: সেলিম উদ্দিন ও দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণে নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তর প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি খুরশিদ আলম নেতারা। উপস্থিত জামায়াত নেতারা মাহমুদুর রহমানকে শুভেচ্ছা জানান এবং অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।এছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নগর সম্পাদক ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. আব্দুল্লাহ, আমার দেশের বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী প্রমুখ।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি আমার মতো করে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আপনারা আমাকে আমার মতো করে লড়াই করতে দিন। বিগত ১৬ বছর ধরে আমরা এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দল তাদের মতো করে লড়াই করেছে। আর আমি আমার দেশ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে আমার মতো করে লড়াই করেছি। আপনাদের সঙ্গে এই বিষয়ে আমি দীর্ঘ আলোচনা করতে পারছি না। জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পরে আরও বড় পরিসরে আপনাদের সাথে দেখা হবে। আপনাদের সাথে সেদিন আমি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ভারতীয় আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করব।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ সকল শহীদদের স্মরণ করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের একজন বিপ্লবী আইকন আবু সাঈদ। সাঈদসহ সকল শহীদ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা তাদের কখনও ভুলব না।
তিনি বলেন, পরাজিত ফ্যাসিবাদ বিদেশে বসে, তার বিদেশি প্রভু ও এজেন্টদের নিয়ে বিপ্লবকে নসাৎ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আবার ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে না পারে এদিকে খেয়াল রাখবেন।বিপ্লবী ছাত্র-জনতার কাছে আহ্বান রেখে মাহমুদুর রহমান বলেন, ছোটখাটো কারণে অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না। এই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। যার ফলে ছয় বছর নির্বাসনে থাকার পর আমি মাতৃভূমিতে ফিরতে পেরেছি। আমাকে উদ্ভট ও মিথ্যা মামলায় সাত বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। আমার নামে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। এমনও হতে পারে আমাকে জেলে যেতে হতে পারে। আপনারা বিচলিত হবেন না। আমি আইনিভাবে সবকিছু মোকাবিলা করব।
উল্লেখ্য- আওয়ামী সরকারের সময় মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে সারা দেশে ১২৪টি মামলা করা হয়েছিল। ২০১০ সালের জুনে প্রথম দফায় আমার দেশ বন্ধ ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আটক করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল আবারও দ্বিতীয় দফায় আমার দেশ বন্ধ করে মাহমুদুর রহমানকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দিনের পর দিন রিমান্ডে নিয়ে চালানো হয় নির্যাতন। পরবর্তীতে সাজানো এক মামলায় মাহমুদুর রহমান এবং তার স্ত্রীকে ৭ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়।