পেশাগত সনদ বঞ্চিত নার্সদের কঠোর হুঁশিয়ারি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:০২:২৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: শিক্ষাজীবন শেষ করেও কর্মজীবনে প্রবেশ করতে না পারায় চরম অনিশ্চয়তায় জীবন কাটাচ্ছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) বিভাগ (৩ বছর মেয়াদী) থেকে পাশ করেও পেশাগত সনদ (নাসিং রেজিস্ট্রেশন কার্ড) বঞ্চিত আছেন ৩ হাজার ২০০ জন নার্স। সকল প্রকার যোগ্যতা অর্জন করা সত্ত্বেও তাদেরকে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত এই বৈষম্য নিরসন না করা হলে আমরণ অনশনসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোনার বাংলা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন নার্সরা।তারা বলেন, ২০০৫ সালে তৎকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) সহ মোট ৭টি হেলথ টেকনোলজি কোর্স চালু করে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সরকার বদল হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আন্তঃজটিলতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে পাশ করা ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) সহ মোট ৭টি হেলথ টেকনোলজির ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারি ও বেসরকারি চাকরি ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন। এমন অবস্থায় ২০১৩ সালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ১৪৪তম বোর্ড সভায় ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার টেকনোলজি (৩ বছর মেয়াদী) কোর্সের নাম পরিবর্তন করে অন্যান্য কোর্সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটি ৪ বছর মেয়াদী করা হয়।
তারা বলেন, এরমধ্যে ৩ বছর মেয়াদি কোর্সে পড়াশোনা শেষ করা শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানির পরে হাইকোর্ট ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে রায় দেয়। পরে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। সেখানেও দীর্ঘ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে রায় দেয়।সংবাদ সম্মেলনে সোনার বাংলা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলমগীর রানা অভিযোগ করে বলেন, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ আমাদের পক্ষে রায় দিলেও সেটি বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ছাত্র-ছাত্রীরা আবারও আন্দোলন শুরু করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের ৫ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী কমপ্রিহেন্সিভ পরীক্ষার মাধ্যমে পেশাগত সনদ (লাইসেন্স) প্রদান করা হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা গত ১৫ বছরের বৈষম্যের অবসান চাই। বিশেষ করে গত ১১ আগস্ট থেকে আমাদের পেশাগত সনদ (লাইসেন্স) দেওয়ার কাজ শুরু হলে বিগত আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের দোসর বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত নার্সিং নেতাদের বাধার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের দাবি, বাংলাদেশ নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারী কাউন্সিল হতে সকল বৈষম্য দূর করে অনতিবিলম্বে পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) বিভাগে পাসকৃত সকলকে পেশাগত সনদ প্রদান করা হোক। অন্যত্থায় আমরণ অনশনসহ বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানান তারা।