বড়লেখায় মুয়াজ্জিনকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, যুবক ধরে পুলিশে সোপর্দ
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬:৪২:১৪ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি: বড়লেখা উপজেলার নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের হলদিরপাড় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন হোসাইন আহমদ মাছুমকে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা ও মোটরসাইকেল পুড়ানোর অভিযোগে উশৃঙ্খল যুবক আব্দুল হামিদকে (২২) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে গ্রামবাসি। পরদিন পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রউপ আদালতে আসামীর তিন দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেছেন। জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর গভীর রাতে মসজিদের হুজরার বাউন্ডারি টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ হুজরার বারান্দায় রাখা মোটরসাইকেলে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় সে মুয়াজ্জিনের ঘরের দরজা বাহির থেকে আটকে রাখে যাতে মোটরসাইকেলের আগুন ভেতরে ছড়িয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি পুড়ে মারা যান। তবে, আগুন দেখে প্রতিবেশিরা এগিয়ে জানালা দিয়ে মুয়াজ্জিনকে ডেকে তোলায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এমন ঘটনায় মসজিদ কমিটি ও গ্রামবাসি সোচ্চার হয়ে ঘটনাকারিকে খুঁজতে থাকেন। এরই মাঝে অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ গ্রামের কয়েকজনের সাথে দম্ভোক্তি করে বলেছে, মুয়াজ্জিন হোসাইন আহমদ মাছুম তার সাথে একদিন তর্কবিতর্ক করেছেন, এইজন্য সে তাকে পুড়িয়ে মারতে হুজরায় মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছিল। এই স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে গ্রামবাসি শুক্রবার রাতে আব্দুল হামিদকে আটক করেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের জেরার মুখে সে মুয়াজ্জিনকে মেরে ফেলতে উনার মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে রাখার সত্যতা স্বীকার করে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, মুয়াজ্জিনের মোটরসাইকেল পুড়ানো ও তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় এলাকাবাসি লজ্জায় ও হুমকিতে পড়েন। ঘটনাকারিকে খুঁজে বের করতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালানো হয়। অবশেষে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে গ্রামবাসি তার জবানবন্দী নেন। তিনিও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ শত শত গ্রামবাসির সম্মুখে স্বীকার করেছে প্রতিশোধ নিতে সে এমন কান্ড ঘটিয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্দ্বিধায় বলেছে, গ্রামের আরো কয়েকজনের খড়ের ঘর সে পুড়িয়েছে। এরপর মসজিদ কমিটিসহ উপস্থিত সকলের সিদ্ধান্তে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় এবং ভুক্তভোগি মুয়াজ্জিন হোসাইন আহমদ মাছুম অগ্নিসংযোগকারি ও হত্যা চেষ্টাকারি আটক আব্দুল হামিদকে প্রধান আসামি ও আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন।
বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিএসআই ফখরুজ্জামান বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রউফ সোমবার আসামি আব্দুল হামিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেছেন। আদালত রিমান্ড প্রার্থনাটি শুনানির জন্য রেখেছেন।