জৈন্তায় ৪ মাস পর গ্যাস ফিল্ড কর্মকর্তার লাশ উত্তোলন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ৮:১৯:৩৭ অপরাহ্ন
জৈন্তাপুর প্রতিনিধি: জৈন্তাপুর উপজেলায় মৃত্যুর ৪ মাস পর সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্মকর্তা মইনুল হোসেন (৫০) এর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টায় সিলেট জেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এর উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।
গত ১৩ জুন রাত ১২ টায় মইনুল হোসেন আয়ানি মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে সিলেট তামাবিল মহাসড়কের সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ৮ নং কূপ সম্মুখে একটি ডিআই ট্রাক মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এরপর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলেই বিষয়টি প্রচার হতে থাকে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই আয়ানির লাশ পরিবারের সদস্যরা দাফন করে।
ঘটনার পরে নিহতের ভাই নজমুল হোসাইন (এমদাদ) বাদী হয়ে ৯ জনের নামে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে ৩ অক্টোবর জৈন্তাপুর মডেল থানা মামলাটি আমলে নিয়ে রেকর্ডভুক্ত করে।
সড়ক দুর্ঘটনা নয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবী করেন নিহত আয়ানির পরিবার। পরিবার সূত্রে জানা যায়, একটি শালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে মইনুল হোসেন আয়ানিকে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
দুপুরে জেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এর উপস্থিতিতে জৈন্তাপুর উপজেলাধীন ৬ নং চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলনের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি সালিশি বিচারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন আয়ানী। তিনি জৈন্তাপুরের চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামের মরহুম ঈসা মেম্বারের ছেলে। গত জুন মাসে উমনপুর হাইওয়ে ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন আজাদ খানের বাড়িতে লেচু চুরির ঘটনা ঘটায় আসামী উমর আলী (২২), সোহেল আহমদ বারেক (২২) ও ইউসুফ আলী (২২), লেচু চুরির সালিশে আয়ানির জোরালো ভূমিকায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তারা ১৩ জুন রাতে রাস্তায় ডিআই পিকআপ দিয়ে আয়ানির মোটরসাইকেল গতিরোধ করে লোহার পাইপ/রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর তারা সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে আয়ানীর পরিবার, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ডিআই পিকআপ গাড়িটি ঐ রাতেই হরিপুর এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।