ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি : ৭ বছরেও শেষ হচ্ছে না যাদুকাটায় সেতু নির্মাণ কাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ৫:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন
তাহিরপুর প্রতিনিধি:
পর্যটন স্পট, তিনটি শুল্কবন্দর, নদীর দুই তীরের বাসিন্দাসহ চার উপজেলার যোগাযোগ ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে ৭ বছর পূর্বে যাদুকাটা নদীর ওপর শাহ আরেফিন (র.) ও অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৩০ মাসের মধ্যেই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও ঢিলেমির কারণে সেতুর কাজ শেষ করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সর্বসাধারণ।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি ও বিন্নাকুলী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি জেলার সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় পাহাড় আর অপরূপ সৌন্দর্যের যাদুকাটা নদী ঘিরে জমে উঠেছে সুনামগঞ্জের পর্যটন শিল্প। সেই শিল্পকে আরও চাঙ্গা করতে সেতু নির্মাণ শুরু হয়। সীমান্ত এলাকা হয়ে সুনামগঞ্জ-ঢাকা-নেত্রকোনার সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে সেতু নির্মাণ হলে। আর এই একটি সেতুকে ঘিরে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার লাখ লাখ মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইলফলক সৃষ্টি হত। এখন লাখ লাখ মানুষের স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে এসেও আলোর মুখ দেখতে পারছেন না সেতুটির পূর্ব পারের অংশে কাজ না করায়।
আরও জানা গেছে, গত ৭ বছরের মধ্যে এই একটি সেতু নির্মাণের সময় বাড়ানো হয়েছে চারবার। এতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাভ হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে জীবন জীবিকার যেমন পরিবর্তন করতে পারছেন না তেমনি চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় তমা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কাজটি শুরু করে ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে। ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটিতে এ পর্যন্ত ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে মাত্র ৫৭টি এবং ১৫টি স্লাবের মধ্যে ১০টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ১৮টি গার্ডার ও ৫টি স্ল্যাবের কাজ এখনও বাকি রয়ে গেছে ৭ বছর পরেও।
স্থানীয় বাসিন্দা জমশেদ মিয়া জানান, যাদুকাটা নদী পারি দিতে প্রায় ৩০ মিনিট লাগে। আর বর্ষার সময় আরও বেশি সময় লাগে আর টাকাও খরচ হয়। অনেক সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। সেতুটি সম্পন্ন হলে এই দুর্ভোগ পোহাতে হত না।
সেতু নির্মাণ কাজ দেরী হওয়ার কারণ হিসাবে বার বার বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণকে দায়ী করে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ম্যানেজার মোহাম্মদ নাসির জানিয়েছেন, আগামী বছর জুনের মধ্যেই শেষ হবে কাজ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঠিকাদারের অবহেলায় নির্মাণ কাজ বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি আরও জানান দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন।