ওসমানীনগরে ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবীতে বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৬:১৩ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
ওসমানীনগর উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা সাহেদ আহমদ মূসার পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে এলাকার বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর টোলপ্লাজা নামক স্থান থেকে ছাত্র জনতার সমন্বয়ে একটি মিছিল শুরু হয়ে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে সাদীপুর ইউপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় মুরব্বী মালিক উল্লাহ, বিএনপি নেতা শাহ এহিয়া সহ গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে চেয়ারম্যানকে বিকাল ৪টার মধ্যে পদত্যাগের সময় বেঁধে দেন ছাত্র জনতা।
এদিকে, ইউপি কার্যালয়ের সামনে ছাত্র জনতার অবস্থানকালে শামিম মেম্বারকে ইউপি কার্যালয়ে দেখে তার উপর চড়াও হয় শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি দ্রুত কার্যালয় ছেড়ে চলে গেলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে শ্লোগান দেয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ৪ আগস্ট শেরপুরে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শাহজালাল বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাঈম আহমদ, জুমান কোরেশি, শাহ উসামা আহমদ রাগিব, সৈয়দ ফারহান আহমদ মুরসালিন, শাহ মাহমুদ, সৈয়দ মুজাক্কির আহমদ, আল মাহদী, সিরাজুল ইসলাম,আতিকুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, মাসুমা আক্তার, সামিরা রহমান, তাম্মি আকতার, কনিকা জান্নাত, আসমা আক্তার মিনু, রাহিমা বেগম, জিসান আহমদ, মো. সায়মনসহ শতাধিক ছাত্র জনতা।
প্রসঙ্গত গেল ৪ আগস্ট বিকাল ৫টার দিকে শেরপুর গোল চত্বরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন করে স্থানীয় ছাত্রজনতা। তখন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কর্মীরা আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করলে আহত হন- ছাত্রনেতা জুমান কোরেশি, সৈয়দ ফারহান আহমদ মুরসালিন, রাব্বি, সবুজ ও সায়মন। শিক্ষার্থীদের দাবী, ঐ দিন আওয়ামীলীগ নেতা চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মূসা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইমরান হোসেন, ওলি, শুভাস, সিশতি, আলাউদ্দিন, শামিম মেম্বার, দিলোয়ার, কয়েছ, সাকিব, মুহিব ও সালমান গংরা তাদের হামলা করেন। তারা আরো দাবী করেন, হামলার পর শেরপুর ব্রিজ বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের তল্লাশী করেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। তখন তারা ব্রীজ দিয়ে না গিয়ে নৌকাযোগে কুশিয়ারা নদী পাড়ি দিয়ে বাড়ি এসেছেন।
৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুসা ছুটি নিয়ে শামিম মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলে ৪ নভেম্বর সকালে ইউপি কার্যালয়ের সামনে এসে তার পদত্যাগ দাবীতে আন্দোলনের ডাক দেয় স্থানীয় ছাত্র জনতা। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে মিছিল এবং অবস্থান কর্মসূচীর আয়োজন করে তারা।
আন্দোলনকারী শাহ উসামা আহমদ রাগিব বলেন, চেয়ারম্যান মূসা নেতা কর্মীদের নিয়ে আন্দোলনে ছিলেন, আমাদের কাছে ভিডিও আছে। জুমান কোরেশি ও সায়মন বলেন, আন্দোলনে অংশ নেয়ায় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা আমাদের রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারপিট করেছে। শাহজালাল বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাঈম আহমদ বলেন, স্বৈরাচারের দোসর মূসা চেয়ারম্যান আমাদের হামলা করে লন্ডনে চলে যান। তিনি আবার দায়িত্ব নিয়েছেন শুনে সোমবার আমরা ইউপি কার্যালয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের ঠেলা ধাক্কা দেয়। আমরা স্বৈরাচারের দোসর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই এবং শামীম মেম্বারকেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেখতে চাই না। ইউপি চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মূসা বলেন, আমি মারামারিতে অংশ নেইনি, বিষয়টি ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।