জলঢুপে মাল্টা বিপ্লব দুলু মিয়া’র
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ৬:০৩:৪৬ অপরাহ্ন
তোফায়েল আহমদ, বিয়ানীবাজার: সিলেট বিয়ানীবাজারের জলঢুপী আনারস এবং কমলা দেশে একনামেই চিনেন সবাই। যদিওবা দিনদিন সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই জলঢুপেই এবার মাল্টার বাম্পার ফলন দেখিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন দুলু মিয়া নামের এক সৌখিন কৃষি উদ্যোক্তা। ২০১৯ সালে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু করার পরের বছরেই ফলন পেতে শুরু করেন তিনি। তবে ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে বাণিজ্যিকভাবে তিনি মাল্টা বিক্রি করেছেন আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকার।
সরেজমিনে উপজেলা শহর থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টিলা বেষ্টিত এলাকা জলঢুপে ৫০ শতক জমির উপর চার শতাধিক গাছের মাল্টা বাগান দেখতে গিয়ে যে কারো মনে হতে তিনি ইউরোপের কোনো দেশে এসেছেন। গাছে গাছে শত শত বারী-১ এবং বারী-৪ জাতের মাল্টা ঝুলছে থোকায় থোকায়। এবছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন বলে জানান গোলাপগঞ্জ উপজেলার বানিগ্রামের বাসিন্দা কৃষি উদ্যোক্তা দুলু মিয়া।
তিনি জানান, জলঢুপ আনারস ও কমলার জন্য বিখ্যাত হলেও বাণিজ্যিকভাবে কেউ সফল হতে পারেননি। এখানে অন্যান্য ফল চাষের কম বেশি ঝুঁকি থাকলেও মাল্টা চাষ অনেকটা নিরাপদ। তাই ২০১৯ সালে নিজের স্বজনের ৫০ শতক জায়গা লিজ নিয়ে তিনি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া মাল্টার চারা রোপণ করেন। ২০২১ সাল থেকে মাল্টার ফলন শুরু হয়। ২০২২ ও ২০২৩ সালে ফলন হয়। বাগানে আসা অনেক পর্যটক ও এলাকার মানুষ কিনে নিয়ে যান, যা থেকে তিনি ভালো আয় করেছেন। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে মাল্টার বাম্পার ফলন হওয়ায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার মাল্টা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করেছেন। তার আশা এখনো দুই লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করবেন।
মাল্টার পাশাপাশি এখানে ঐতিহ্যবাহি জলঢুপী কমলা, দার্জিলিং কমলা ও চায়না কমলার শতাধিক গাছ রয়েছে। কমলার ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে কমলা বিক্রি শুরু করবেন বলে জানান। তিনি প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বিয়ানীবাজার কৃষি অফিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বিশেষ করে তৎকালীন কৃষি অফিসার আনিসুজ্জামানের সহযোগিতার কথা স্মরন করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন পতিত জমিতে তরুণরা মাল্টা চাষে এগিয়ে এলে তার সহযোগিতা থাকবে।
মাল্টা কিংবা যেকোনো কৃষিজাত ফসল উৎপাদনে কৃষিবিভাগ কাজ করছে বলে জানায় উপজেলা কৃষিবিভাগ। বিশেষ করে মাল্টা চাষিদের আশানুরূপ ফলনে প্রত্যাশিত সাফল্য হতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হেকিম প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, দুলু মিয়া একটি পতিত জমিতে সাইট্রাস জাতীয় ফল মাল্টার বাগান করে সফল হয়েছেন এবং বর্তমান তরুণদের জন্য অনুকরনীয়। তার মতো যেকেউ কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাইলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।