গুলিস্তানে সবাই ছিলো, ছিলো না আ’লীগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ৯:০৭:৩৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে ও ‘অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার’ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। তবে এই এলাকায় ১৬ বছর দেশ শাসন করা দলটির নেতা-কর্মীদের দেখা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ছাত্র-জনতা আর বিএনপির নেতা-কর্মীদের দখলে ছিলো রাজধানীর জিপিও ও গুলিস্তান এলাকা। শাহবাগ থেকে লাখো ছাত্র-জনাতকে নিয়ে মিছিল করে ইসলামী ছাত্র শিবির।
আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল প্রতিহত করতে সকাল থেকেই রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অপর দিকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি-যুবদল-মহিলা দলসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
রোববার বিকেল ৩টায় রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে এই বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল দলটির। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দলটির এমন কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি।
এ দিন গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে দেখা যায়, পুলিশ, র্যাব, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশদের (ডিবি) অবস্থান করতে দেখা যায়। গুলিস্তানে নূর হোসেন চত্বরের পাশে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত গণজমায়েতের কর্মসূচি পালন করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান ও বক্তব্য দিচ্ছে। একই সাথে তারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।
অন্যদিকে জিরো পয়েন্ট নূর হোসেন চত্বরের মোড়ে দাঁড়িয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছবি তুলতে দেখা যায়। এই মোড়ের সিগন্যালে যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সৃষ্টি হয় যানজট। বিকেল ৩টায় দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দলসহ আওয়ামী বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের অবস্থান করছেন। তারা আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।সকাল থেকেই সেখানে আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপি ও যুবদলের কর্মীরা। বিকেল ৩টায় তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
এর আগে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে গণজমায়েত কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টায় জিরো পয়েন্টের পাশে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে গণজমায়েত কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটির নেতারা।
গণজমায়েতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমরা ম্যাচ খেলব শুধুমাত্র ছাত্রলীগের সঙ্গে, যুবলীগের সঙ্গে এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে উৎখাত করার জন্য সবার মাঠে নামার প্রয়োজন নাই। শুধু ঢাকা কলেজের ছাত্ররাই যথেষ্ট।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম বলেন, এই গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট তো দূরের কথা, এর আশেপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেও ‘গুজব লীগ’ নামতে পারবে না। তাদের মাঠে নামা তো দূরের কথা; বিন্দুমাত্র গুজবের যদি তারা কোনো জায়গায় চেষ্টা করে, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করবো।
তিনি বলেন, এই ‘গুজব লীগ’ যখন দেখছে রাজপথে কিছু করার সামর্থ নেই। যখন তারা দেখছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিকেক বোধ সম্পন্ন এই ছাত্র-জনতা রাস্তায় আছে, তখন মুখ দেখানোর মতো তাদের মুখ নেই। এই মুখেই বিগত ১৬ বছরে তারা চুনকালি মাখিয়েছে। তাদের জননী নেতাকর্মীদের চুনকালি মাখিয়ে, নিজে মেখে পালিয়েছে। আমার যদি ওইটুকু নৈতিকতা থাকতো, ভালো কাজ করতাম, গার্ড থাকতো, বোল্ডনেস থাকতো- আমি দেশ ছেড়ে পালাতাম না।