সময়মতো পাঠ্যপুস্তক বিতরণে অনিশ্চয়তা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৮:২১:০৩ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ এখনও শুরু না হওয়ায় আগামী ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের কারণে বই ছাপানোর কাজ নির্ধারিত সময়ের থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে সময় মত স্কুলগুলোতে এসব বই বিতরণ করা হয়তো সম্ভব হবে না।
তারা জানিয়েছেন, নতুন বছরের প্রথম দিন প্রাথমিক (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) ও মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ কোটির বেশি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রাথমিকের জন্য ১০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ চলছে। মাধ্যমিকের জন্য বাকি ৩০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজেই শুরু হয়নি। এসব চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে, এনসিটিবি এখন মাধ্যমিকে ১০টি বা তার বেশি বই দেওয়ার পরিবর্তে প্রধান ৫টি বই দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, মাধ্যমিক স্তরের ১৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর জন্য তহবিল অনুমোদন করা হয়েছে। তারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহে ছাপার কাজ শুরু হবে।তিনি আরও জানান, দ্রুত ছাপানোর কাজ শেষ করতে আর্মি প্রিন্টিং প্রেসকে এক কোটি বই ছাপানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, এছাড়া ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে সম্পাদনার কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এতে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত কিছু গ্রাফিতি অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি কয়েকটি সংশোধনও থাকছে।
এদিকে, বাংলাদেশ প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ কোটি বই ৪৫ দিনের মধ্যে ছাপানো অসম্ভব; কাজটি সম্পূর্ণ করতে অন্তত আরও ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন। পাঁচটি বই ছাপার কাজ অগ্রাধিকার দেয়ায় কিছু কাজের আদেশে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও জানান, এছাড়া, পাঠ্যপুস্তকের পান্ডুলিপি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে তাদের কাছে পৌঁছায়নি। তারা এনসিটিবির সঙ্গে পরামর্শ সভায় এসব উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এনসিটিবি জানিয়েছে, এ বছর মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তক ৬৮০টি লটে ছাপানো হবে, যা গত বছর ছিল ৪১৭টি। দ্রুত ছাপার কাজ শেষ করতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়বে। গত বছর ৮২টি প্রিন্টিং প্রেস ব্যবহার করা হয়েছিল, আর এবার ব্যবহৃত হবে ১০০টি প্রেস।
বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিকের জন্য ৮টি, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির জন্য ৪১টি, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর জন্য ৫৫টি ও সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য ১টি প্রেসে বই ছাপার কাজ চলছে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার ২০২২ সালের পাঠ্যক্রম বাতিল করে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে।