রাখাইন রাজ্য হারানোর পথে মিয়ানমারের জান্তা!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৯:২৬:৩২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: রাখাইনে মিয়ানমার জান্তা বাহিনী আরও ৪ শহর হারানোর পথে বলে দাবি করেছে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর আগে রাজ্যটির ১৭টি শহরের মধ্যে ১১টিই দখল করে তারা। নতুন করে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটির আন, তাউংগুপ, মংডু ও গোয়া শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে আরাকান আর্মি চাপ দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। আরাকান আর্মি বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দাবি করেছে, সামরিক হাসপাতাল ও একটি অস্ত্রাগারসহ অ্যান শহরের লড়াইয়ে তারা ৮টি জান্তা ব্যাটালিয়ন ঘাঁটিকে পরাজিত করেছে। তারা জান্তার পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের সদর দপ্তরসহ রাখাইন রাজ্যের আরও চারটি শহর দখল করতে প্রস্তুত।
রাখাইনের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মেজরসহ প্রায় ৩০০ জান্তা সেনা সম্প্রতি আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। লড়াইয়ের কারণে অ্যান শহরে প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা আটকা পড়ে আছে।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা সংবাদমাধ্যম ইরাবতিকে বলেন, গত রোববার একটি জান্তা হেলিকপ্টার ওয়েস্টার্ন কমান্ড সদর দপ্তরে শক্তি বৃদ্ধির রসদ পাঠানোর সময় ভূপাতিত করা হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মংডু শহরেরও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সর্বশেষ তাদের হামলায় জান্তা সরকার সমর্থিত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও বিমান হামলার সহায়তা করা জান্তা সেনারা বর্ডার গার্ড পুলিশের সদর দপ্তরে অবস্থান নিয়েছে।
রাখাইনের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রাখাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আইয়ারওয়াদির সীমান্তবর্তী গোয়াও ঘিরে রেখেছে আরাকান আর্মি সেনারা। প্রতিবেদন আরও বলছে, জাতিগত সশস্ত্র বাহিনীটি তাউংগুপের বাইরে জান্তা ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখল করেছে। আরাকান আর্মির আক্রমণ প্রতিহত করতে জান্তা সৈন্যরা প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নেওয়ায় শহরে এখন লড়াই চলছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আন ও তাউংগুপকে রক্ষার জন্য জোরপূর্বক ৬০০ রোহিঙ্গা পুরুষকে ‘ঢাল হিসেবে ব্যবহার’ করছে জান্তা সরকার। তবে এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। আরাকান আর্মি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সহযোগী সদস্য তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’র (এমএনডিএএ) গত বছরের অক্টোবরে ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু করে। ২৫টি শহর এবং আরাকানের রাজধানী লাশিওসহ উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ দখল করে তারা।
আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বরে তাদের নিজ রাজ্যে অভিযান সম্প্রসারণ করে এবং গত বুধবার রাখাইন থেকে জান্তাকে বিতাড়িত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে অভিযানের প্রথম বার্ষিকী পালন করে। রাখাইনের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১১টি এবং প্রতিবেশী চিন রাজ্যের পালেতওয়া টাউনশিপ দখল করে নিয়েছে জাতিগত বাহিনী।
হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধারে স্থল সেনা পাঠাতে বাধা পেয়ে জান্তা সরকার বিমান ব্যবহার করে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণাধীন শহর ও গ্রামগুলোতে বোমা হামলা চালাচ্ছে। এতে কয়েক ডজন সিভিল বাসিন্দা নিহত ও আহত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বাড়িঘর।