যক্ষা রোগীদের বিষণ্ণতা ৪ গুণ বেশি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৯:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: যক্ষ্মা রোগীরা মানসিক সমস্যায় ভোগেন। যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে বিষণ্ণতা যক্ষ্মা না থাকা মানুষের চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি। অন্যদিকে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ২০ শতাংশকে যক্ষ্মা আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের চতুর্থ দিন শুক্রবার দুটি পৃথক অধিবেশনে এ তথ্য দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার বালিতে পাঁচ দিনের এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। সারা বিশ্বের তিন হাজারের বেশি প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
গতকাল প্ল্যানারি অধিবেশনে যক্ষ্মা রোগ ও মানসিক সমস্যা নিয়ে গবেষকেরা বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক আনিকা সুইটল্যাড বলেন, যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি নানা কারণে মানসিক চাপে পড়ে। তাদের মধ্যে বিষণ্ণতা ও অন্যান্য মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যক্ষ্মা রোগীদের বিষণ্ণতা যক্ষ্মা না থাকা মানুষের চেয়ে ৩ দশমিক ৭ গুণ বেশি। তিনি বলেন, বিষণ্ণতার কারণে যক্ষ্মা রোগী ঠিকমতো ফলোআপ চিকিৎসা করান না। তাই যক্ষ্মা রোগীদের মৃত্যু হার বেশি।
প্যানেলিস্টরা বলেন, যক্ষ্মা চিকিৎসায় মানসিক সমস্যার বিষয়টি অনেকটাই উপেক্ষিত থেকেছে। তবে যক্ষ্মা রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিলে যক্ষ্মার প্রকোপ ও যক্ষ্মায় মৃত্যু কমে। পাকিস্তানের গবেষক উজমা খান একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঢাকা, পাকিস্তানের করাচি ও ফিলিপাইনের ম্যানিলা শহরে যক্ষ্মা রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, মনোবিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। ঢাকায় যক্ষ্মাসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগা ৫৯৭ জনের মধ্যে ২৬৩ জন বা ৪৪ শতাংশের মানসিক সমস্যা চিহ্নিত করা গেছে।
যক্ষ্মা থেকে সুস্থতার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার গুডম্যান মাকান্ডার ফুসফুসের কিছু অংশ ফেলে দিতে হয়েছে। এখন তিনি কেপটাউনে যক্ষ্মা রোগীদের মানসিক সেবায় কাজ করেন। গুডম্যান মাকান্ডা বলেন, ‘সেবাদাতাকে যক্ষ্মা রোগী সম্পর্কে জানতে হবে। রোগীটি কে, কোথায় থাকে, কী করে, অর্থনৈতিক অবস্থা কী—সব আন্তরিকতার সঙ্গে জানতে হবে। রোগীকে না জানলে তাঁকে মানসিক সহায়তা দেওয়া যায় না।’
অপুষ্টির শিশুর যক্ষ্মা বেশি :
শুক্রবার সকালে একই সময়ে শিশুদের যক্ষ্মা নিয়ে দুটি পৃথক অধিবেশন হয়। একটি অধিবেশনে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের মধ্যে যক্ষ্মার প্রকোপ নিয়ে আলোচনা হয়। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের প্রতিনিধি জেসমিন আরমার বলেন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের তীব্র অপুষ্টির সঙ্গে অন্য কোনো রোগ থাকলে যক্ষ্মার ঝুঁকি বাড়ে। নাইজেরিয়া ও নাইজারে গবেষণা দেখা গেছে, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর অন্য শিশুর তুলনায় যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) তীব্র অপুষ্টি নিয়ে ভর্তি থাকা শিশুদের যক্ষ্মা নিয়ে গবেষণা করছেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মোহাম্মদ জুবায়ের চিশতি। তিনি বলেন, তীব্র অপুষ্টি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি পাঁচটি শিশুর একটি যক্ষ্মায় আক্রান্ত।