লন্ডনে জামায়াত আমীরের সাথে প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের মতবিনিময়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৪:০৯:৩১ অপরাহ্ন
লণ্ডন থেকে বদরুজ্জামান বাবুল ঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, কোন দিন যদি আল্লাহ তায়ালা দেশের খেদমত করার দায়িত্ব আমাদের হাতে তুলে দেন, আমরা প্রবাসীদের লাশ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দেশে আনার ব্যবস্থা করব। আমরা এটাকে রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান গুরুদায়িত্ব বলে মনে করব। তিনি ১৪ নভেম্বর, লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সিতে বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের (NRB’s Voice) এর উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুল বারি’র সভাপতিত্বে এবং পরিষদের সেক্রেটারি জনাব সৈয়দ আহবাব হোসেন পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা মারা গেলে তাদের লাশগুলোর কি হবে? এটা নিয়ে রাষ্ট্রের চিন্তা করা উচিত। তারা যা রুজি করেন প্রায় সবই দেশে পাঠিয়ে দেন। তাদের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য তারা কোন ডিপোজিট করে রাখতে পারে না। আমরা মুখে মুখে শুধু গালভরা বুলি দিয়ে তাদেরকে ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ বলি। বাস্তবে তাদের জন্য যা করা উচিত আমরা তা করতে পারছি না। পশ্চিমের দেশগুলোতে যারা সিটিজেনশীপ পেয়েছেন তারা মারা গেলে আদের লাশ আর দেশে যাচ্ছে না। কারণ তাদের পরিবার এখানে এবং আল্লাহ তায়ালার হুকুম হচ্ছে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার লাশ খুব দ্রুত দাফন করা উত্তম।
তিনি প্রবাসীদের দেশে ইনভেস্টের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, প্রবাসিরা দু’ভাবে দেশের কল্যাণ করতে চান। একটা হলো দান খয়রাতের মাধ্যমে আরেকটা ইনভেস্টের মাধ্যমে। দান খয়রাত করতে গেলেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আপনি একটা ব্যবসা করবেন তাও কত ঘাটের পানি খেতে হয় তার কোন শেষ নেই। অথচ আমরা ইনভেষ্ট করার আহবান জানাচ্ছি। ইনভেষ্ট করার একটি পরিবেশ তো থাকতে হবে। সেই পরিবেশ তৈরীতে এই সরকারের সদিচ্ছা আছে। এ সময়ের মধ্যে তারা হয়তো সবকিছু করতে পারবে না। আমরা আশা করি তারা অন্তত একটা রাস্তা দেখিয়ে যাবেন। তাহলে পরে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা আগামীতে সে পথে চলতে বাধ্য হবেন।
অনেকে ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে ধ্বংস করে আবার অনেকে ক্ষমতায় না গিয়েও সৎ ইচ্ছা থাকার কারণে দেশ ও জাতির জন্য অনেক কিছু করে। আপনারা আমানত হিসেবে আমাদের উপর আস্থা রাখলে, আমাদেরকে ভোট দেয়া উপযুক্ত মনে করলে আমরা দেশ ও জাতির সেবায় সর্বদা নিজেদের নিয়োজিত রাখব।
জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দিন শেষে বাংলাদেশই আমাদের সব। এখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণে টুকরা টুকরা করলে আমরা অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারবো না। অনেকেই ম্যানপাওয়ারকে অভিশাপ দেন কারণ আমরা স্কীল ডেভলেপমেন্ট করি নাই। আমরা কাগজ বিতরণ করি একটার পর একটা, বছরের পর বছর। সে কাগজগুলো ইনভেলিড, এগুলো কথা বলে না। আমরাতো আমাদের বাচ্চাদের হাতগুলোকে কর্মীর হাত বানাইনি। এভাবে যদি স্কীলফুল হাত আমরা তৈরী করতে পারি তাহলে এই বিশাল ম্যানপাওয়ার কখনো অভিশাপ হবে না।
যারা কর্মঠ, যাদের সৎ সাহস আছে তাদেরকেই সত্যিকারের তারুণ্য বলা যায় উল্লেখ করে ডা. শফিক বলেন, আমরা এই ধরনের তরুণদের হাতে আজ দেশকে তুলে দিতে চাই।
উক্ত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ব্যরিস্টার আবু বকর মোল্লা, পরিষদের সহ সভাপতি ফয়েজুর রহমান, সাবেক সভাপতি আশিকুর রহমান, পরিষদের উপদেষ্টা শাহগীর বাগত ফারুক, সানা উল্যাহ, কাউন্সিলর ফারুক চৌধুরী, সহ সভাপতি আয়েশা চৌধুরী, ট্রেজারর আবদুল হালিম চৌধুরী এবং আবু নাছের মুঃ মুজাহিদ।