বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্কনীতি হবে রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের : হুমায়ুন কবির
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৫:৫২:১০ অপরাহ্ন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেছেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক হবে রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের, প্রভুর সাথে গোলামের নয়। শুধু ভারত নয়, বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিএনপির পলিসি হবে বন্ধু রাষ্ট্রের মতো। পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমতার ভিত্তিতে প্রতিটি রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। আমাদের নেতা আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করতে চান। সুখী সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গঠনে বিএনপি তার আদর্শিক কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছে। সেই আলোকেই বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত আন্দোলনে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে ঠিকই। আর এর পেছনে তারেক রহমানের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়ে তিনি বিদেশে নির্বাসিত থাকলেও সর্বদা দেশ জাতিকে নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেছেন। তার টানা ১৭ বছরের কাজের ফলাফল ছিল ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান। বিএনপির রাজনীতির মূলনীতি হচ্ছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন। তাই ছাত্র সমাজের সাথে বিএনপির কোন বিরোধ নেই এবং থাকবেও না।
তিনি শনিবার রাতে নগরীর জিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টের হলরুমে সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক সালেহ আহমদ খসরুর উপস্থাপনায় মতবিনিময় সভায় সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার প্রতিনিধিত্বশীল বিপুলসংখ্যক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য হুমায়ুন কবির। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে ভারতের সাথে প্রভু আর গোলামের মতো সম্পর্ক তৈরী করেছিল। যার কারণে ভারত আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পেয়েছে। বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সাথে আমরাও সুসম্পর্ক রাখতে চাই। তা হবে সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক ঐতিহাসিক। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে সেই সম্পর্কে চিড় ধরানোর চেষ্টা করেছিল। শেষ অবধি তারা সফল হয়নি। তারেক রহমান চীনসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতি জোর দিয়েছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এর সুফল জনগণ পাবে।
হুমায়ুন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পালাবদলে ফ্যাসিস্টদের খুশী হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ সরকার বদলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির খুব একটা পরিবর্তন হওয়ার নজির নেই। আমাদের বিশ^াস যুক্তরাষ্ট্র কোন ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসনের সুযোগ দিবেনা। বিএনপির মূল শক্তি হলো জনগণ। তাই গণতন্ত্রকে বিকশিত করাই বিএনপির আসল উদ্দেশ্য। দীর্ঘদিন গণতন্ত্র না থাকার কারণে দেশের আজ এমন অবস্থা। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি সেক্টরকে কলুষিত করেছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো নানা ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদে বিধ্বস্ত রাষ্ট্রকে মেরামত করতে বিএনপির ৩১ দফার বাস্তবায়নই যথেষ্ট। এতে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রতিটি দেশপ্রেমিক জনতাকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. সাজেদুল করিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) মিফতাহ সিদ্দিকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর জাকির আহমদ চৌধুরী, শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর হায়াতুল ইসলাম আখঞ্জী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ সিলেটের সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের উপপরিচালক মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ জিয়াউর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আশিক উদ্দিন চৌধুরী, ময়নুল হক চৌধুরী, সিলেট জজ কোর্টের সাবেক পিপি এডভোকেট এটিএম ফয়েজ, মহানগর আদালতের পিপি এডভোকেট বদরুল আহমদ চৌধুরী, সিলেট মেডিকেল বিশ^বিদ্যলয়ের ডীন প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম, সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. রাশেদ হাসনাথ ও প্রফেসর ড. সিদ্দিকুল ইসলাম, সরকারী মদন মোহন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ফরিদ আহমদ, সিলেট ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন, লন্ডন বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুস সাত্তার, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএম হেলাল, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, সিলেট চেম্বারের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ তুহেল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি লিটন আহমদ প্রমূখ। বিজ্ঞপ্তি