যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ৫০ শতাংশ বেড়েছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৮:৪৯:৪৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি বেড়েছে। যা গত এক দশকে ৫০ শতাংশেরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড গার্মেন্টসের (ওটেক্সার) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি করে এমন দশটি দেশের মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন, পরের অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। মূলত গত এক দশকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এ সময়ে বাংলাদেশ তার সাশ্রয়ী উৎপাদন ক্ষমতা, উচ্চ মানসম্পন্ন পোশাক এবং দক্ষ শ্রমশক্তির মাধ্যমে ভারতের মতো দেশকেও পেছনে ফেলেছে।
ওটেক্সার আরো দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। তবে ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত (১০ বছর) যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির ঐ পরিসংখ্যান মতে, চীন প্রথম অবস্থানে থাকলেও এক দশকে তাদের পোশাক শিল্পের রফতানি কমেছে প্রায় অর্ধেক। আর সে জায়গায় বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। একইসঙ্গে ভারত, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোরও রফতানিও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড গার্মেন্টসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ছিল ৪ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২২ সালে এই রফতানি উন্নীত হয় ৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলারে। অবশ্য ২০২৩ সালে আকস্মিকভাবে এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। ঐ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি প্রায় এক চতুর্থাংশ হ্রাস পেয়ে রফতানি দাঁড়ায় ৭ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি হ্রাস পেয়েছিল ২২ দশমিক ০৪ শতাংশ, যার প্রভাবটাই মূলত পড়েছিল বাংলাদেশের পোশাক রফতানির ওপর। তবে সার্বিকভাবে ঐ দশকে (২০১৪ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত) যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে প্রথম অবস্থানে থাকা চীনের ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি ছিল ২৯ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। সেখানে ২০২৩ সালে এই রফতানি হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ এক দশকের মধ্যে রফতানি হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৪৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি ছিল ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। সেখানে ২০২৩ সালে এই রফতানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের রফতানি বেড়েছে ৫২ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
ওটেক্সার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পোশাক রফতানি ছিল ৩ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে এই রফতানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারে। আর ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের পোশাক রফতানি ছিল ১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার পোশাক রফতানি গত এক দশকে বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে যেখানে দেশটির রফতানি ছিল ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২৩ সালে এই রফতানি উন্নীত হয় ৩ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে।
তবে গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে চীনের পাশাপাশি হ্রাস পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস এবং ইন্দোনেশিয়ার পোশাক রফতানিও। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রফতানি ১৩ দশমিক ৩১ শতাংশ, মেক্সিকোর ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ, হন্ডুরাসের ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার রফতানি হ্রাস পেয়েছে ১৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ।