ইতালী যাওয়ার পথে জুড়ীর যুবকের মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৬:০৮:০২ অপরাহ্ন
জুড়ী প্রতিনিধি:
স্বপ্নের দেশ ইতালীতে যাবার জন্য দালালের মাধ্যমে বাড়ি ছাড়ে লিটন আহমদ চৌধুরী (৪০)। প্রায় দুই মাস পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। অবশেষে বেলারুশের সীমান্ত এলাকায় জঙ্গলের ভিতরে কয়েকদিন থেকে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পান তার স্বজনরা। সোমবার সে লাশের ছবি দেখে লাশটি লিটনের বলে শনাক্ত করেন তার পরিবার। লিটন মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের জাঙ্গিরাই গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেন চৌধুরীর বড় ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক লিটন দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার ছিল। সেখানে তার ব্যবসা ছিল। তার বাবা মোশারফ হোসেন চৌধুরী দীর্ঘদিন কাতার ছিলেন ও ব্যবসা করতেন। লিটন ইতালী যাবার জন্য কাতারের ব্যবসা ছেড়ে দেশে আসে এবং পরে দুবাই যায়। দুবাই থেকে দালালের মাধ্যমে ইতালী যাবার প্রক্রিয়া করে এবং সে উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ে। দালাল লিটনসহ ১৮ জনকে মধ্য পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ নেয়। সেখান থেকে জঙ্গলাকীর্ণ সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে পোল্যান্ড প্রবেশ করায়। উদ্দেশ্য ছিলো পোল্যান্ড সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তারা ইতালী প্রবেশ করবে। কিন্তু পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের আটক করে বেলারুশ ফেরৎ পাঠায়। এভাবে কয়েকবার ঘটে। শেষবার সাথের লোকজন নিরাপদে সরে গেলেও লিটনের ভাগ্য সহায় হয়নি। স্বজনদের ধারনা- প্রচন্ড ঠান্ডা ও খাদ্যাভাবে দুর্বল হয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণেও জঙ্গলের ভিতরেই তার মৃত্যু হতে পারে। জঙ্গলের ভিতরে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে লিটনের স্বজনরা দালালের সাথে যোগাযোগ করলে সে মৃত্যুর বিষয়টি তাদের নিকট গোপন করে সে বেঁচে আছে বলে জানায়। এক পর্যায়ে স্বজনরা আদম পাচার কাজে জড়িত অন্যপক্ষের সাথে চুক্তি করলে ওই পক্ষ লিটনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং লাশের ছবি পাঠায়। ছবি দেখে স্বজনরা লাশটি লিটনের বলে শনাক্ত করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লিটনের চাচা আয়ারল্যান্ড প্রবাসী মাসুদ করিম চৌধুরী ও ইতালী প্রবাসী হাবিবুর রহমান চৌধুরী লিটনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশ বেলারুশের একটি হাসপাতালের মর্গে আছে। সেদেশের আইন অনুযায়ী লাশ দেশে নেয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।