কমলগঞ্জে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৬:০১:৫৩ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নুরজাহান চা বাগানে ইউপি সদস্য ছালেহ আহমদ এর বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে আলাল মিয়া (৪৫) নামে এক ডাকাত নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয় আরো ২ ডাকাত।
রোববার রাত পৌনে ২টায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত ডাকাত আলাল মিয়া সিলেট জেলার মোগলাবাজার থানার গোটাটিকর গ্রামের সোনাফর আলীর ছেলে। এ ঘটনায় ডাকাতের আরো দুই সদস্য গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা।
মাধবপুর ইউপি সদস্য ছালেহ আহমদ ও এলাকাবাসী জানায়, রোববার রাত পৌনে ২টার দিকে ১০/১২ জনের একদল ডাকাত ইউপি সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে চা বাগানের পাগলা ঘন্টা বাজালে স্থানীয় চা শ্রমিকরা ডাকাতদের ঘেরাও দেয়। এসময় ডাকাতরা স্থানীয় জনতার উপর হামলা করতে এগিয়ে গেলে স্থানীয় জনতা তাদের ধরে গণধোলাই দিলে ঘটনাস্থলে আলাল মিয়া নামের এক ডাকাত নিহত হয়। বাকিরা পালিয়ে গেলে রোববার ভোরে রক্তের ছাপ দেখে চা বাগানের ভেতর থেকে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত আবুল মিয়ার ছেলে আব্দুল মালেককে তীরবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে পুলিশকে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে, পুলিশ জানায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসা বাকি ডাকাত সদস্যরা মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আসিদ আলির ভাতিজা সেজুল মিয়ার লংগুরপাড় গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালানোর সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চারজন ডাকাত পালিয়ে গেলেও সেজুল মিয়াকে আটক করা হয়। পরে রোববার সকাল ৯ টায় কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি চা বাগানের সেকশন থেকে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় শ্রীপুর গ্রামের শ্রাবণ মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরফে জসিমকে আটক করে পুলিশকে সোপর্দ করে স্থানীয় চা শ্রমিকরা। পুলিশ আহতদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত আলাল মিয়া রোববার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। অপর আহত কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৪১) ও শ্রাবন মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরফে জসিম (৩৮) মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে আলাল মিয়া নামে এক ডাকাত নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শামীম আকনজী জানান, আটক ডাকাতদের বিরুদ্ধে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন থানায় ডাকাতির মামলা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, জনরোষ থেকে দুই ডাকাতকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় আটক ৩ জন হলো- কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের লংগুরপার গ্রামের আরজদ আলীর ছেলে সেজুল মিয়া (৩৭), শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৪১) ও শ্রাবন মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরফে জসিম (৩৮)। আটককৃতদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।