জগন্নাথপুরে ধান কাটার ধুম
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ৬:৪৫:০৫ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা: বন্যা বিপর্যয় কাটিয়ে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় চলতি রোপা-আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াই চলছে পুরোদমে। সবমিলিয়ে আমনের বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে উপজেলার কৃষকদের মুখে। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা ও সংগ্রহের কাজে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সাড়ে ৯ হাজার ৬শত ৪ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। আমন ধান চাষাবাদে প্রদর্শনীসহ প্রায় ১৩শ কৃষককে সার বীজসহ সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৫শত ২০ মেট্রিক টন। এবার রোপা-আমন মৌসুমে সরাসরি প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ১৩২০ টাকা দরে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ৫৪০ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। এজন্য কৃষি তালিকা চূড়ান্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পাইলগাঁও ইউনিয়নের ধান ব্যবসায়ী মাতাব আলী বলেন, মোটা ধান ৮৫০ ও চিকন ধান ১০৫০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করছি। ধানের দাম উঠা নামা করে, সকালে একদর বিকেলে আরেক দর।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে- উপজেলার মিরপুর, পাটলী, কলকলি, সৈয়দপুর-শাহারপাড়া, হলদিপুর-চিলাউড়া, রানীগঞ্জ, পাইলগাঁও ও আশারকান্দি ইউনিয়নের কৃষকদের ক্ষেতে ৮০ ভাগ ধান পাকা এবং ২০ ভাগ খেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ও সনাতন পদ্ধতিতে ধান কাটতে দেখা গেছে। মাড়াই ঝাড়াই আর ধান শুকানোর কাজে কৃষাণ কৃষাণীদের দিন শেষ হচ্ছে। এদিকে কাটা ধান বাড়িতে আনতে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করতে দেখা গেছে। শুধু ধানই নয় গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ধানের খড়কুটো সংগ্রহ করে রাখছেন কৃষকেরা।
মিরপুর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের কৃষক আশরাফ মিয়া বলেন, ৪০ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি, ফলন ভালো হয়েছে। কলকলি ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের কৃষক জহিরুল হক বলেন, ২০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা ফলন ভালো হয়েছে। পাটলী ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের কৃষক মুসা মিয়া বলেন, চাষাবাদ করতে খরচ বেশি লাগে, ফলন ভালো হয়েছে। তবে উপযুক্ত মূল্য পাওয়ার দাবি জানাই।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কাওসার আহমেদ বলেন, এবার উপজেলায় আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো এবং বৃষ্টিপাত হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ ছিলনা, এজন্য আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ ভাগের বেশি পাকা ধান কাটা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ধান কাটা শেষ হবে। আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার ছাড়াও স্থানীয় কৃষকেরা ধান কাটছেন, তবে আমন মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কট নেই।
এবার জগন্নাথপুর উপজেলায় ৯হাজার ৬শত ৪ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ হাজার ৫শত ২০ মেট্রিক টন। ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কৃষকরা তাদের ফসলের উপযুক্ত মূল্য পাবেন।