বাংলাদেশী হাইকমিশনে হামলার নিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ১৭৬ কর্মকর্তার
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:০৯:০৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার, ভারতীয় আগ্রাসন, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন এবং আগরতলাস্থ বাংলাদেশের সহকারি হাই কমিশন অফিসে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ১৭৬ জন কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার পলিসি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ ও মহাসচিব আবদুল বারী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছি যে স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারতীয় উগ্রপন্থি কিছু রাজনৈতিক মহল ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছে। এরই মধ্যে কিছু উগ্রপন্থী উশৃঙ্খল দুর্বৃত্ত প্রথমে কলকাতাস্থ বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার-এর অফিসের সামনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অগ্নিসংযোগ করে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করে। আন্তরাষ্ট্রিক সম্পর্ক বিনষ্টকারী এমন একটি ন্যাক্কারজনক অপৎপরতার শেষ হতে না হতেই ভারতের একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আগরতলাস্থ বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনের কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং অফিস ভাঙচুর করে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ইহা আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন। পৃথিবীর যেকোনো দেশের দূতাবাস হচ্ছে সেই দেশের সার্বভৌমত্বের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনো রাষ্ট্রের দূতাবাসে যে কোনো আক্রমণ বা হামলাকে সেই দেশের উপরে হামলা বলে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা প্রদানে ভারতীয় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই হামলার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক যথাযথ শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘এসব ঘটনায় আমাদের কাছে এটা খুবই স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের মাটিতে একটি মেকি সম্প্রদায়িক দাঙ্গার ছল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে ভারতের সরকারের মদদপুষ্ট একটি উগ্রবাদী মহল একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী নানা রকম উস্কানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা শান্তিকামী জনগণ এসব ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সম্পূর্ণ সজাগ, সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। শত্রুরা যতই অপচেষ্টা করুক না কেন তারা কখনোই ষড়যন্ত্রকারীদের পাতানো ফাঁদে পা দেবে না বরং যে কোন মূল্যে দেশবাসী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে এবং সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চক্রান্তকারীদের হীন প্রচেষ্টার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে। এটা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে ভারত ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করার অজুহাতে বাংলাদেশকে তাদের উপনিবেশ করে রাখতে চাইছে। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ পাকিস্তানের উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের উপনিবেশ হওয়ার জন্য স্বাধীন হয়নি। এদেশের মানুষ শত্রুর সাথে লড়তে জানে, বীরের মতো মরতেও জানে। বাংলাদেশের জনগণ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে হলেও তাদের আত্মমর্যাদা রক্ষা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নের কোনো আপস করবে না ‘
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন- বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি মো. আবদুল কাউয়ুম, সাবেক সচিব সৈয়দ সুজাউদ্দিন আহমেদ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আব্দুর রশীদ সরকার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ইকতেদার আহমেদ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা কর্ণেল (অবঃ) মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলজি প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মকসুমুল হাকিম চৌধুরী, মো. আবদুজ জাহের, আফতাব হাসান, সাবেক যুগ্ম সচিব বিজন কান্তি সরকার, এ কে এম জাহাঙ্গীর, এ বি এম আব্দুস সাত্তার, তপন চন্দ্র মজুমদার, আখতার আহমেদ, এস এম শমসের জাকারিয়া, মুন্সি আলাউদ্দিন আল আজাদ, এ এইচ এম মোস্তাইন বিল্লাহ, ড. মো. আব্দুস সবুর, মোঃ আতাউল হক মোল্লা, এম এম সুলতান মাহমুদ, মো. আব্দুল খালেক, মো. ফিরোজ খান নুন, সাবেক সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ জাকারিয়া, সাবেক উপসচিব বশীর উদ্দীন আহমেদ, মোঃ নবীউল হক মোল্যা, সাবেক ডিআইজি মো. মেজবাহুন্নবী প্রমূখ।