বাজারে সয়াবিন তেলের ‘সংকট’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:৫২:১৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেটের বাজারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছেনা সয়াবিন তেল। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। দোকানীরা বলছেন, কোম্পাানীগুলো তেল সরবরাহ করছেনা। ফলে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটারে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি দামে। ক্রেতার চোখে ধুলো দিতে সয়াবিন তেলের বোতল রাখা হচ্ছে গোপনে। সুপারশপগুলোতে তেল থাকলেও চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছেনা।
শুক্রবার নগরের বন্দরবাজার, শিবগঞ্জ, মিরাবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেটসহ অধিকাংশ বাজারে এমন চিত্র দেখে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে এক-দুইটি করে তেলের বোতল প্রকাশ্যে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো দোকানে একটিও নেই। প্রতি লিটার বোতলজাত তেল ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করছে। আধা লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে দোকানভেদে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার দরে।
দোকানদাররা জানান, এক সপ্তাহ ধরে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো কোনো তেল আনছে না। পাইকারি বাজারে গিয়েও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনো দোকানে দুই-চার লিটার তেল পাওয়া গেলেও দাম বেশি। এজন্য আমরাও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছি। কেন বাড়তি দাম নিচ্ছে, এ নিয়ে তাদের কাছে বক্তব্য নেই।
তেল কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, এগুলো আসলে ঠিক না। ওই যে হয় না, হঠাৎ একট জিনিস নাই করে দিয়ে দাম বাড়িয়ে ফেলার যে ব্যাপারটা, ওইরকম আরকি। এটা শুরু হইছিল হাসিনার আমলে। এখনও ব্যবসায়ীরা সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
এদিকে, সয়াবিনের সংকটে ক্রেতারা বাধ্য হয়ে কিনছেন পামওয়েল। সেই পামওয়েলও মিলছে অতিরিক্ত দরে। তবে শীতের দিন হওয়ার কারণে পামওয়েল নিয়ে স্বস্তিতে নেই দোকানদাররা। রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কোথাও কোথাও তেলের ছোট্ট ড্রাম বা বোতলের লম্বা সারি রেখে দেওয়া হয়েছে জমে যাওয়া পামওয়েল তরল হওয়ার জন্য। অবশ্য সুপারশপগুলোতে মিলছে সব ধরনের ভোজ্যতেল। তবে চাহিদামতো কেনা যাচ্ছে না।
সুপারশপে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, দুই লিটার ৩৩৪ টাকা এবং তিন লিটারের বোতল ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। একেকটি সুপারশপে নির্দিষ্ট একটি ব্র্যান্ডের ভোজ্যতেল বিক্রির প্রাধান্য দেখা গেছে।
এদিকে, তেলের গাড়ি বাজারে না আসার কারণে কোনো কোনো দোকান বাড়তি তেল সংগ্রহ করে রেখে গোপনে বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। সেসব দোকানে বাড়তি দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। তবে এ নিয়ে প্রশাসনের কোন মনিটরিং এখনো চোখে পড়ছেনা বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
একাধিক প্রতিষ্ঠানের সেলসম্যান ও কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বাজারে তেল না পাওয়া বা কোম্পানি থেকে সরবরাহ নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।ভোজ্যতেলের সংকটের বিষয়ে ভোক্তার নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মূল্য সংযোজন কর কমানোসহ নানা সুবিধা দেওয়ার পরও ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এবারের রমজানে পরিস্থিতি আরও অস্বস্তিকর হতে পারে। এখনই যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।