নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:৫৫:০৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়নসহ নানা কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। তবে এখনো সরবরাহে এখনো বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে সরকার হাতে নিয়েছে একটি বিশেষ প্রকল্প-‘পাওয়ার ট্রান্সমিশন স্ট্রেংদেনিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন অব রিনিউবেল এনার্জি প্রজেক্ট’।
এই প্রকল্প সিলেটসহ দেশের ছয়টি বিভাগের ১৪টি জেলায় বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি। সিলেট ছাড়াও বিভাগগুলো হলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি হচ্ছে এমন শক্তির উৎস, যা সহজে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি এবং জ্বালানির অন্যান্য প্রাকৃতিক উৎস। এর ব্যবহার পরিবেশের ওপর চাপ কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে কার্যকর। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করার পাশাপাশি দেশের বিদ্যুৎব্যবস্থার মানোন্নয়ন করা হবে। এতে করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও বিদ্যুতের প্রবাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে থাকা প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় গত ২৭ অক্টোবর উত্থাপন করা হয়েছে। এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি ইতিমধ্যে নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে এবং সরকার এটি নিয়ে ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে। তবে প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য কিছু সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কর্মপরিকল্পনা আরও সুনির্দিষ্ট করা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নির্ধারণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সুপারিশগুলো কার্যকর করা হলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন আরও সহজ এবং ফলপ্রসূ হবে।সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারের এই ইতিবাচক মনোভাব প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে, যা দেশের বিদ্যুৎ খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
প্রকল্পের আর্থিক কাঠামো :
প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৪ হাজার ৪ কোটি ২ লাখ টাকা, যা তিনটি উৎস থেকে নির্বাহ করা হবে। সরকারের তহবিল থেকে ১০২২ কোটি ৪০ লাখ টাকা (২৫.৫৩%), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে ২৩৬০ কোটি টাকা (৫৮.৯৪%) এবং পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬২১ কোটি ৬২ লাখ টাকা (১৫.৫৩%) ব্যয় করা হবে। এই ত্রিমুখী আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।