নির্বাচন নিয়ে জল্পনা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:৫৪:৪৮ অপরাহ্ন
আগামী বছরই নির্বাচিত সরকার : উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন
জালালাবাদ রিপোর্ট : রক্তঝরা অভূত্থান ও ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের রাজনীতি এমনিতেই নতুন দিকে বাঁক নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির মাঠে দাপিয়ে বেড়ালেও আওয়ামীলীগের রাজনীতি চলছে আড়ালে। রাজনীতির এই বাঁকবদলের মাঝে নির্বাচন নিয়েই যতসব জল্পনা।
এই জল্পনার মাঝে গতকাল শনিবার শিক্ষা উপদেষ্টা জানালেন, আগামী বছরই (২০২৫) রাজনৈতিক সরকার দেখবে দেশবাসী। এর আগে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেছিলেন, ২০২৬ এর মাঝামাঝি নির্বাচন। আর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছিলো, নির্বাচন কবে সে ঘোষণা দিবেন খোদ প্রধান উপদেষ্টা। এ অবস্থায় এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনায় নির্বাচন আসলে কবে? বিএনপি শুরু থেকেই দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছে। জামায়াতও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে। কথা হচ্ছে জাতীয় ঐক্য নিয়েও।
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির মুখে হঠাৎই আবার গুঞ্জন শুরু হয়েছে ‘জাতীয় সরকারের’। এই সরকার নির্বাচনের আগে, না পরে গঠন করা হবে, তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পর পর দু’দিন বৈঠক হয় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্বের। এরপর একসাথে সব দলকে নিয়ে হয় সংলাপ। দু’টি দলের নেতারাই যেমন যথাশীঘ্র নির্বাচন করার কথা বলেন, পাশাপাশি আলোচনা হয় জাতীয় সরকারের।
ওদিকে, নবগঠিত নির্বাচন কমিশন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে ভোটার তালিকা করার কথা জানিয়েছে। তাতে ওই ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন হতে পারে ২০২৬ সালে। এ অবস্থায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর চাহিদায়ও পরিবর্তন আসতে পারে বলে একটি পক্ষ মনে করছে।
ওদিকে, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে সংস্কার কমিশন কাজ করছে। এখনো জমা দেয়া হয়নি তাদের প্রস্তাবনা। কমিশন প্রধান বদিউল আলম বলেন, ‘সুচারুভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন’ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে কিছু প্রস্তাব দেয়া হবে। যেগুলো কিছু তারা বাস্তবায়ন করবে। কিছু সরকার করবে। আর কিছু সরকার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। এ নিয়ে ‘উই আর অন দ্য সেম পেইজ’। আমাদের মধ্যে খুব একটা মতপার্থক্য নেই।
এমন বহুমাত্রিক কাজ ও কথামালার মাঝে নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা ও ধোঁয়াশা যখন রাজনীতিতে তখনই নতুন তথ্য দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি জানালেন, আগামী বছরই নির্বাচিত সরকার দেখব। তবে নির্বাচিত সরকারবিষয়ক এই মত একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত। শেষমেশ কী হবে, তিনি জানেন না। এর মধ্যে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার অব. সাখাওয়াত হোসেন লন্ডনের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে, যা গণমাধ্যমে এসেছে।
অথচ গত ২৪ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আগামী নির্বাচন কবে হবে, তা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। এ নিয়ে বাকি যাঁরা কথা বলছেন, সেগুলো তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত।
এর আগে এক সাক্ষাতকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা সংস্কারের গতির ওপর নির্ভর করছে। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করতে হবে। এরপর নির্বাচন দেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা, তাঁর প্রেস উইং ও উপদেষ্টাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে এখন নানা জল্পনা শুরু হয়েছে নির্বাচন নিয়ে। আসলে নির্বাচন কবে হতে পারে?