সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক সদস্যদের সমাবেশ : ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০০:০৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিভাজন, ধর্ম, দল ও মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। দেশের তরুণ প্রজন্ম এবং ছাত্র-জনতাকেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি ভারত প্রশ্নে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বদলে সমতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে হবে।
শনিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবের সামনে ‘জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ’-এর ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা। কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ ছিলেন এই সমাবেশের আহ্বায়ক। এই সমাবেশে কয়েকশ’ নারী-পুরুষ অংশ নেন। তাঁরা সমাবেশ শেষে রাওয়া ক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে মূল সড়ক ধরে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর গেট পেরিয়ে বিমানবাহিনী স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত যান। সেখান থেকে আবার মিছিল নিয়ে রাওয়া ক্লাবের সামনে ফিরে কর্মসূচি শেষ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) লুৎফুল হক।
মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ সমাবেশে বলেন, নতজানু পররাষ্ট্রনীতিকে কোনো অবস্থাতেই আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, সাম্যতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে হবে। ভারতের জনগণের সঙ্গে এ দেশের মানুষের কোনো শত্রুতা নেই, তাঁরা (ভারতের জনগণ) এ দেশের মানুষের বন্ধু। কিন্তু ভারতের গেরুয়া পোশাকধারী হিন্দু আধিপত্যবাদকে কোনোভাবেই এ দেশে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
এ দেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করছেন উল্লেখ করে আহসানুল্লাহ বলেন, ‘হজরত শাহজালাল (রা.), হজরত শাহ মখদুম (রা.), অতীশ দীপঙ্কর, শ্রীচৈতন্য, অনুকূল ঠাকুর, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখের আবাসভূমি এই বাংলাদেশ। আমরা যুগ যুগ ধরে এই শ্যামলভূমিতে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছি। কিন্তু অতি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘লেডি ফেরাউন’ পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতের হিন্দু নেতৃত্বের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে আমাদের দিকে। তাদের ইদানীংকালের কর্মকা- এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে।’ তিনি বলেন, ‘তাদের (হিন্দু নেতৃত্বের ) সর্বশেষ উদ্যোগ ছিল আগরতলা এবং কলকাতার বাংলাদেশি মিশনে আক্রমণ চালানো এবং আমাদের বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করা। আমরা এই ঘটনাগুলোকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে মনে করছি।’
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কোনো দূতাবাসে হামলার অর্থ সেই দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা উল্লেখ করে আহসানুল্লাহ বলেন, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে যখন সার্বভৌমত্বের ওপরে হামলা হয়, দেশের পতাকা পদদলিত হয়, তখন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চুপ থাকতে পারেন না। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শক্তি সম্পর্কে বলতে সমাবেশে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ান বলেন, মোদিজি (নরেন্দ্র মোদি), অমিতজি (অমিত শাহ) এবং রাজনাথজি (রাজনাথ সিং)-আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেটা দেখেছেন, সেটি বাহাত্তর সালের। সেই সেনাবাহিনী এখন আর নাই। আপনারা আর আস্ফালন তুলবেন না, ভয় দেখাবেন না। আপনাদের সীমান্তেই রুখে দিতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে ১৭ কোটি জনতা আছে।