জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই ব্যর্থ হবে : ডা. শফিকুর রহমান
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:০২:৩১ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতীয় স্বার্থের জায়গায় আমরা যেন বিভক্ত না হই, বরং আমরা যেন ঐক্যবদ্ধ থাকি। জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে জাতির বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে। আল্লাহ তাদেরকে ব্যর্থ করে দিবেন, ইনশাআল্লাহ। বুধবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার বার্ষিক অধিবেশন তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে মগবাজার আল ফালাহ মিলানায়তনে এ বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার-এর পরিচালনায় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো: তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান করেন।
তিনি বলেন, আমরা একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ মানবিক দেশ চাই। আমরা একটা দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাই। সুবিচারপূর্ণ একটি সমাজ চাই। আমরা আমাদের যুবকদের এদেশের উন্নয়নের কারিগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব আমরা ক্রমান্বয়ে তাদের হাতে তুলে দিতে চাই। এমন রূপক বাংলাদেশ গঠনে, মানবিক বাংলাদেশ গঠনে, আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের প্রতি সম্মান রেখে সকলকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা আশাবাদী, প্রিয় দেশবাসীর সহযোগিতা পেলে একটা কাঙ্খিত বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব।
আমীরে জামায়াত বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন এমন একটি সময় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন আমাদের প্রিয় জন্মভূমি এ বছরের ৫ আগস্ট একটা কাঙ্খিত পরিবর্তন উপহার পেয়েছে। দেশে-বিদেশে অংশগ্রহণকারী এই পরিবর্তনের মূল কারিগর, নায়ক ও সহযোদ্ধা বিশেষভাবে যারা তাদের মূল্যবান জীবন দিয়ে জাতির এই কাঙ্খিত পরিবর্তন এনে দিয়েছেন আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছি। আমি তাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি। এই পরিবর্তনে আমাদের অসংখ্য সহকর্মী ভাই-বোন, যুবসমাজ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। অনেকে চোখ হারিয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধত্ব বরণ করেছেন, অনেকে হাত হারিয়েছেন, অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এখনো অসংখ্য ছাত্র-জনতা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কষ্ট নিয়ে এখনো যারা বেঁচে আছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের দ্রুত সুস্থ করে দেন। শহীদ পরিবারের গর্বিত, সম্মানিত মর্যাদাবান সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সহানুভূতি এবং শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছি। দেশের ভিতরে ও বিদেশের মাটিতে আন্দোলন করতে গিয়ে অনেকেই জেল-জুলুম এবং হয়রানির শিকার হয়েছেন। এখনো কোনো কোনো দেশের কারাগারে আমাদের নাগরিকেরা বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। আমরা সরকারকে অনুরোধ করবো দ্রুততম সময়ের ভিতরে আমাদের ভিশনগুলোকে কার্যকর করে সরাসরি ঢাকা থেকে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন। তাদের সম্মানের সাথে দেশে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।
তিনি বলেন, দেশ যখন এই পরিবর্তনের ইতিবাচক ধারায় আছে তখন আমরা লক্ষ্য করছি, এই দেশকে অশান্ত করার জন্য পতিত স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা দেশে-বিদেশে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তারা আমাদের সমাজকে অস্থিতিশীল করতে চায়। আলহামদুল্লিাহ, বাংলাদেশের বিচক্ষণ দেশপ্রেমিক জনতা তাদের পালস বুঝতে পেরে তাদের ব্যর্থ করে দিয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র আল্লাহ-তায়ালা ব্যর্থ করে দিয়েছেন। তাদের এই অপপ্রয়াস জাতিকে আরেকবার ঐক্যবদ্ধ হতে সহযোগিতা করেছে। আমাদের প্রতিপক্ষ যদি এটা বুঝতে পারেন, এই দেশের মানুষ আর কারো কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করবে না এবং কোনো রক্ত চক্ষুকে পরোয়া করবে না। বিজ্ঞপ্তি