অস্থিরতা কাটছেনা বাজারে
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১০:১২ অপরাহ্ন
আরো বেড়েছে চাল, মুরগীর দাম
স্টাফ রিপোর্টার : এ সপ্তাহেও কোন সুখবর মিলেনি বাজারে। বরং বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে হঠাৎ করেই। বাজারগুলোতে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। ভরা মওসুমে চালের দাম আরো বেড়েছে। স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন, পেঁয়াজের দামও। ফলে বাজারে অস্বস্থি রয়েই গেছে।
দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় উঠেছে। সোনালি কক ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণে খাদ্যে দাম কমাতে হবে। শুক্রবার বাজারঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বন্দরবাজারের একাধিক বিক্রেতা বলেন, খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তারা বলেন, প্রতিদিনই খাদ্যের দাম বাড়ছে। এ কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে আমাদেরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে, দেশে আমনের এই ভরা মৌসুমে পাইকারিতে চালের দাম বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহে বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে। এতে খুচরা পর্যায়ে সরু চালের দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে।
খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। এর প্রভাবে খুচরা ও পাইকারিতে দাম বেড়েছে। চালকল মালিকদের দাবি, ধানের দাম বাড়ায় তাঁরা চালের দাম বাড়িয়েছেন।
আমন মৌসুমে চালের দাম বাড়ার প্রকৃত কারণ বুঝতে পারছেন না উল্লেখ করে একাধিক বিক্রেতা বলেন, আমরা বাড়তি দামে কিনলে বিক্রিও সে অনুসারে করতে হয়।
চালের বাজারে স্বস্তি ফেরাতে গত ২০ অক্টোবর এর ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, রেগুলেটরি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং আগাম কর ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতেও দাম না কমায় গত ৩১ অক্টোবর চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেয় সরকার। তবে এর কোনও প্রভাবই নেই বাজারে।
ক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন ধান ওঠেছে। বাজার এখন চালে ভরপুর; দাম বাড়ার কোনও কারণ নেই। এটি ব্যবসায়ীদের বাজার লুটের কৌশল। বাজারের পাশাপাশি মিলগুলোতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেয়াঁজের দামেও স্থিতিশীলতা আসেনি। বর্তমানে দেশি পুরোনো, স্থানীয় মুড়িকাটা এবং আমদানি করা-এই তিন ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ; এক কেজির দাম ৭০-৮০ টাকা।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট ছিল। খুচরা দোকানগুলোতে এখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে; তবে এখনো পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়নি। ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়। আশা করা হয়েছিল, তেলের সরবরাহ দ্রুত বাড়বে; কিন্তু তা হয়নি।
মুদি দোকানিরা জানান, ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো পুরোদমে তেল সরবরাহ করছে না। তেল পেতে ডিলারদের সঙ্গে একধরনের তর্ক-ঝগড়া করতে হচ্ছে। এরপরও যা পাচ্ছি, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।