৩১শে ডিসেম্বর মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:১৮:৫৭ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: আসছে ৩১শে ডিসেম্বর দেশে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে এবং আওয়ামী লীগ দল হিসেবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে বাংলাদেশে। ওইদিন ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করা হবে। রোববার ঢাকায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এমন কথা বলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এই ঘোষণাপত্র পাঁচই অগাস্টেই হওয়া উচিত ছিল, না হওয়ার ফলে ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তিগুলো ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। দুই হাজারের ঊর্ধ্বে শহীদ এবং ২০ হাজারের ঊর্ধ্বে আহতদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে তারা এই আন্দোলনের “লেজিটেমেসি”কে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান, যে গণ অভ্যুত্থানটি হয়েছে…তার মধ্য দিয়ে মানুষ মুজিববাদী সংবিধানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই যে মানুষ মুজিববাদী সংবিধানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তার একটি লিগ্যাল ডকুমেন্টেশন থাকা উচিত।’
হাসনাত বলেন, ‘সে জায়গা থেকে ৩১শে ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান ঘিরে আমাদের যে গণ-আকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছে, ’৭২ এর সংবিধানের বিপরীতে গিয়ে মানুষ যে রাস্তায় নেমে এসেছে এ অভ্যুত্থানে সেটির প্রাতিষ্ঠানিক, দালিলিক স্বীকৃতি ঘোষণা করার জন্য আমরা ৩১শে ডিসেম্বর ছাত্রজনতার উপস্থিতিতে শহীদমিনার থেকে আমাদের “প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভ্যুলেশন” ঘোষণা করবো।’
তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা-অভিপ্রায় এবং ইশতেহার লিপিবদ্ধ থাকবে এই প্রোক্লেমেশনে। এটা কোনও দলের বা শ্রেণীর প্রোক্লেমেশন না। এবং ’৭২ এর যে সংবিধানের বিরুদ্ধে মানুষ দাঁড়িয়েছে, মুজিববাদী চেতনার বিরুদ্ধে মানুষ দাঁড়িয়েছে, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে মানুষ দাঁড়িয়েছে আমরা চাই স্বীকৃতি দেয়া হোক। আমরা চাই এই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে, যেখান থেকে এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই শহীদমিনার থেকেই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক দল হয়ে পড়বে।’
সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবে মানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন একটি ঘোষণাপত্রে লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করা দরকার, সেটাই কিছুটা দেরিতে হলেও এই ঘোষণাপত্রে থাকবে। প্রয়োজনে সামনে এটি আরো সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জন হতে পারে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই এই ঘোষণাপত্রের ড্রাফট বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে, তারা নিজ নিজ মন্তব্য ও বক্তব্য দিচ্ছেন যা ৩১শে ডিসেম্বর জুলাই প্রোক্লেমেশনে দেখা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হান্নান মাসুদ, ৩১শে ডিসেম্বর সবাইকে ঢাকায় আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা পাঁচই অগাস্ট ঢাকায় আসতে পারেননি, তারা সবাই ৩১শে ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এমন একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের যে চেতনা, সেটিকে বাস্তবায়ন করার কথাই ভাবা হচ্ছে।