আমরা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য রাজপথে লড়াই করেছি : রিজভী
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ৫:২৫:৫১ অপরাহ্ন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান উপদেষ্টা এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিগত দিনে জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথর চেপে বসেছিল। মানুষ নিঃশ্বাস নিতে পারতনা, স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারতনা। রাজনৈতিক দলসমূহ মিটিং মিছিল করতে পারত না। পুলিশ অনুমতি দিলেও যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেয়া হতো। শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো দেশের স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করেছিল। আমাদের নেতা এম. ইলিয়াস আলী দেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে টিপাইমুখ অভিমুখে লংমার্চ করার কারণে হাসিনা তাকে নিরুদ্দেশ করে দিয়েছে। সাথে আরো সাড়ে ৬শত নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। আমরা ভয়ঙ্কর নির্যাতনকে মেনে নিয়ে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজপথে লড়াই করেছি। তারপরও আমরা পিছপা হইনি। সাড়ে ১৫ বছর নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করে আন্দোলন করার ফলে ছাত্রজনতার জুলাই বিপ্লবে হাসিনার পতন হয়েছে। আমাদের নেত্রীকে কারাগারে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। সাড়ে ১৫ বছর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলেই ছাত্রজনতার জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট নগরীর হুমায়ুন রশীদ চত্ত্বরে আমরা বিএনপি পরিবারে উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে যুব এশিয়া কাপ বিজয়ী তরুণ ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারকে উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবীর রিজভী আরো বলেন, আজ একটি ইসলামিক রাজনৈতিক দল নিজেদেরকে একমাত্র দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীকেই শুধু দেশপ্রেমিক বলে দাবি করে। সশস্ত্র বাহিনী সবসময় দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু আপনারা নিজেদেরকে যে দেশপ্রেমিক দাবী করেন, আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন- ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা কি ছিল, আপনারা কোন কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন? কোন সেক্টর কমান্ডারের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছেন? রিজভী বলেন, এখন শুনছি আগামী এক বছরের মধ্যে শুধু জুলাই-আগস্ট হত্যাকান্ডের বিচার হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে- এম. ইলিয়াস আলীকে যারা গুম করেছে তাদের বিচার কি হবে না? যারা বিগত সাড়ে ১৫ বছরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে মানুষকে হত্যা-নির্যাতন করেছে তাদের বিচার কি হবে না?
তিনি বলেন, রুমন ও মিথুনের নেতৃত্বে আমরা বিএনপি পরিবার গঠন করার উদ্দেশ্যে সারাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। এই সংগঠনটি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও কাতার বিএনপির সভাপতি শরিফুল হক সাজুর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আশরাফ হোসেন বকুল, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী ও এম. নাসের রহমান, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুল ও কুহিনূর আহমদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম তোরন, সহ দপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আফসর খান ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আফসান প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে তরুণ ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারের হাতে দুটি ব্যাটারীচালিত অটোর চাবি হস্তান্তর করেন অতিথিবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি