এমসি মাঠে তাফসীর শুরু কাল : সিলেটের ইতিহাসের সর্বোচ্চ জনসমাগমের প্রত্যাশা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৭:১২:০৪ অপরাহ্ন
সাংবাদিকদের সাথে আনজুমানের প্রেস ব্রিফিং
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ এক যুগের বেশী সময় পর সিলেটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (র.) এর স্মৃতি বিজড়িত আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের ৩ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক তাফসীরুল কুরআন মাহফিল। ইতোমধ্যে নগরীর এমসি কলেজ মাঠকে মাহফিল সফলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া মাহফিলে ১০ থেকে ১৫ লাখ লোকের জনসমাগম ঘটতে পারে বলে প্রত্যাশা করেছে আয়োজকবৃন্দ। ঐতিহাসিক মাহফিল সফলে সিলেটবাসীর সাবির্ক সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
ঐতিহাসিক মাহফিল সফলের লক্ষ্যে বুধবার (৮ জানুয়ারী) বিকেলে এমসি কলেজ মাঠে সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন আয়োজকবৃন্দ। আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের সভাপতি প্রফেসর সৈয়দ মোহাম্মদ একরামুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজ মিফতাহুদ্দীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, ইবনে সিনা হাসপাতাল সিলেটের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান, আনজুমানের সহ-সভাপতি ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুকতাবিস-উন-নূর, তাফসীর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হাফিজ আব্দুল হাই হারুন, ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, সাবেক ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন, উপাধ্যক্ষ মাওলান সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, লন্ডন প্রবাসী আলেমে দ্বীন মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, এডভোকেট আলিম উদ্দিন, ব্যবসায়ী নুরুল আলম, মুফতী আলী হায়দার, সাবেক কাউন্সিলার সোহেল আহমদ রিপন প্রমূখ।
মাহফিল উপলক্ষে নগরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, মুসল্লীদের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা, ট্রাফিকের প্রয়োজনে বাইপাস রাস্তা, নিয়মিত গাড়ির মুভমেন্ট সহজ করা, সিলেটে অবস্থান করা বিপিএল খেলোয়াড়দের যাতায়াত, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন, সিটি করপোরেশন থেকে লাইট স্থাপন, ওয়াসব্লক স্থাপন, মাহফিলে ভিআইপি অতিথিদের নিরাপত্তা, স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা, আয়োজক কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বাড়ানো, পানি পান ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, রাস্তাঘাটে দোকান না বসানো, জরুরি ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
ব্রিফিংয়ে আয়োজকবৃন্দ বলেন, আল্লামা সাঈদী (র.) এর স্মৃতি বিজড়িত আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে দীর্ঘ ১২ বছর পর তাফসীরুল কুরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগে ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হলেও এবছর ড. মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর উপস্থিতিকে ঘিরে জনসমাগমের বিষয়টি মাথায় রেখে এমসি কলেজ মাঠে মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত মাহফিল আগামীকাল ৯ থেকে ১১ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। মাহফিল চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। ১১ জানুয়ারী সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহিলাদের জন্য বিশেষ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
মাহফিলে তাফসীর পেশ করবেন শায়েখ সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, আল্লামা ইসহাক আল মাদানী, ড. মিজানুর রহমান আজহারী, শায়খ মোহাম্মদ শাহ ওয়ালী উল্লাহ, মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, মুফতী মাওলানা আমীর হামজা, অধ্যক্ষ মাওলানা লুৎফুর রহমান হুমায়দী, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল আমীন, অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা সাদিকুর রহমান আল আজহারী, মুফতী আলী হাসান উসামা ও আলহাজ¦ শামীম বিন সাঈদী প্রমূখ। এছাড়া জাতীয় ও স্থানীয় উলামায়ে কেরামগণ তাফসীর পেশ করবেন।
আয়োজকবৃন্দ বলেন, মাহফিলের সার্বিক নিরাপত্তায় মেট্রোপলিটন পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিস্তারিত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের পক্ষ থেকেও সাড়ে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। মাহফিল ঘিরে ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে দফায় দফায় ট্রাফিক পুলিশের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টীমও দায়িত্ব পালন করবেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ পানি স্যানিটেশনসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মাহফিল চলাকালে পিডিবির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় বিপর্যয়জনিত কোন কারণে যদি বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে তাহলে তাৎক্ষনিক বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা এবং ওয়াইফাইয়ের সুব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্টেইজের দুই পাশে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড়পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠের বাইরেও ৮টি স্থানে বড়পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল ক্যাম্প, যে কোন অনাকাঙ্খিত দুঘর্টনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া কর্মীদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঐতিহাসিক তাফসীর মাহফিল সফলে সিলেটবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তারা।