বছরের মাঝামাঝিতে নির্বাচন চাইল বিএনপি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:২২:৫৭ অপরাহ্ন
# ‘সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়’
জালালাবাদ ডেস্ক : চলতি বছরের মাঝামাঝিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা বারবার করে বলছি যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নাই। এটা গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে ইমপর্টেন্ট বিষয়। আমরা মনে করি যে, এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুলাই-অগাস্টের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। এই কারণে আমরা সরকারকে আহ্বান জানাতে চাচ্ছি, নির্বাচন কমিশনকেও আহ্বান জানাচ্ছি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানাচ্ছি- দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এই বছরের মাঝামাঝি সময়েই মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।
আগের রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল।
বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে ধারণা দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, ভোট কবে হবে তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে কতটা সংস্কার করে নির্বাচনে যাওয়া হবে, তার ওপর। মোটাদাগে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে হতে পারে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন।
এ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরে সভাপতিত্বে সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার যে বক্তব্য ছিল যে, এই বছরের শেষের দিকে অথবা পরবর্তী বছরের অর্থাৎ ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে-এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি যে, এতো বিলম্বিত করার কোনো কারণ নেই। আমরা মনে করি যে, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গেছে এবং মোটামুটি একটা স্ট্যাবেলিটি এসেছে গভর্নেন্সের মধ্যে সেই ক্ষেত্রে এই নির্বাচন (জাতীয় নির্বাচন) অনুষ্ঠানের জন্য মনে হয় যে- এই মাসে আজ সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের রিপোর্ট এসে যাবে। সুতরাং মনে হয় না- আরও বিলম্বিত করার কোনো কারণ আছে। যত বিলম্ব হচ্ছে, ততই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে।
‘সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়’ :
জাতীয় নির্বাচনের পরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পক্ষে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান তুলে ধরার একদিন বাদে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে ফখরুল। তিনি বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নই ওঠে না। আমরা আগে সংসদ নির্বাচন চাই।
গত রোববার ইসির বৈঠক শেষে কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, কমিশনের সামগ্রিক ফোকাস জাতীয় নির্বাচন। সেদিকে এগোচ্ছেন তারা।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করা নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে। ‘বেশির ভাগ মানুষ চান আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক’, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান তোফায়েল আহমেদের এমন বক্তব্য দেওয়ার পর এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এর মধ্যে শনিবার জাতীয় নাগরিক কমিটি গণঅভ্যুত্থানের পর স্থানীয় সরকার কাঠামো ‘ভেঙে পড়ায়’ নাগরিকরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে মন্তব্য করে বলেছে, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে।
তার আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে সরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হচ্ছে- জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের কোনো প্রশ্নই আসে না। কারণ এখন তো ফোকাসটা পুরো দেশের, পুরো জাতির হচ্ছে- এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উপরে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরকম ক্রিটিক্যাল সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়া অন্য নির্বাচন করার চিন্তাটা আসে কোত্থেকে? নির্বাচন পেছানোর চিন্তাটাই বা আসে কোত্থেকে? কারণ এটা তো আপনার প্রথম কাজ।
‘নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুত’ :
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের জন্য কতগুলো ফরমেলেটিজ আছে- যেমন ভোটার লিস্ট, এই ভোটার লিস্ট রেডি। ভোটার লিস্ট হালনাগাদে বেশি দিন লাগার কথা নয়, এক মাসের মধ্যেই আপনার যদি কেউ হালনাগাদ করতে চায়- সেটা করতে পারবে। এরপরে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগসহ বিভিন্ন কাজ এক-দুই মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়। সবই তো তৈরি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে যে, ‘নির্বাচন করার জন্য আমরা রেডি’ এবং তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার জন্য তৈরি আছে। তারা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে যে, দুইটা নির্বাচন এক সাথে সম্ভব না।