নবীগঞ্জে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার মচ্ছব
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ৬:৫৯:১৭ অপরাহ্ন
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় পরিবেশ আইন অমান্য করে অর্ধশতাধিক স্থানে কৃষিজমি’র উপরিভাগের মাটি কেটে বিক্রি করছে একাধিক চক্র। দিনে-রাতে জমি হতে কেটে নেয়া মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে নীচু জায়গা, সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষিজমির মাটি কাটা দ-নীয় অপরাধ হলেও প্রশাসনের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠছে নানা মহলে।
অন্যদিকে নবীগঞ্জ শহরের ভিতরের সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর ও ড্রাম্প ট্রাক চলাচলের ফলে সড়কগুলো বেহাল অবস্থায় পরিণত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বেপরোয়া গতিতে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর ও ড্রাম্প ট্রাকের চলাচলের ফলে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। এছাড়া নবীগঞ্জ শহরে ধুলোবালির কারণে পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। পথচারীসহ ব্যবসায়ীদের নাকে রুমাল ও মাস্ক পরিধান করে চলাচল করতে দেখা যায়।
জানা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২ এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় নিধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী কৃষিজমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদ- দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদ- দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নবীগঞ্জ পৌরসভার তিমিরপুর, কানাইপুর, গয়াহরি, গোজাখাইর, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এলাকা, সালামতপুর, করগাঁও ইউনিয়নের জৈন্তরী, মিল্লিক, আউশকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দপুর, পারকুল, কুর্শি ইউনিয়নের রাইয়াপুর, বাজকাশারা, হৈবতপুর, সুলতানপুর, রতনপুর, কুর্শি, ফুটারমাটি দেবপাড়া ইউনিয়নের আইনগাঁও, রুস্তমপুর, বাশডর, ভরাকোনো বাউসা, রিফাতপুর, গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল, শতক পানিউমদা ইউনিয়নের খাগাউড়া, কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দারকান্দি, চানপুর, খরিয়া, ইমামবাড়িসহ অর্ধশতাধিক স্থান থেকে কৃষিজমিতে এক্সভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সরবরাহ হচ্ছে নিকটবর্তী ইটভাটায়। বিভিন্নস্থানে এসব মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে জায়গা। পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষিজমি ও টিলার মাটি কাটা দ-নীয় অপরাধ হলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।