বিশ্বনাথে গোয়াহরি বিলে পলো বাওয়া উৎসব
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ৭:৫৭:১৯ অপরাহ্ন
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে বুধবার বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের দক্ষিণের বড় বিলে বার্ষিক পলো বাওয়া উৎসব উদযাপিত হয়েছে। সম্মিলিতভাবে মাছ ধরা উৎসবের পুরনো সংস্কৃতির নাম ‘পলো বাওয়া’ উৎসব প্রতি বছর পালন করে থাকেন গোয়াহির গ্রামবাসী। প্রতি বছর এ মৌসুমে ঘটা করে উৎসবটি পালিত হয় এই উৎসব।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিলের তীরে পলো আর মাছ ধারার নানা সরঞ্জজাম নিয়ে অপেক্ষমান ছেলে-বুড়োসহ শত শত সৌখিন মানুষ। পুরো বিলজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। পরে সকাল ১০টায় কমিটির সায় পাওয়া মাত্রই প্রায় পাঁঁচ শতাধিক শিকারি একসাথে ঝাঁঁপিয়ে পড়েন বিলে। শুরু হয় মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। আনন্দ-উল্লাসে দুপুর পর্যন্ত চলে পলো বাওয়া। এসময় শিকারীদের কেউ কেউ টান দেন গানে, কেউবা মাছ ধরতে পেয়ে দেন উল্লাসে চিৎকার। শিকারিদের পলো, উড়াল জাল, লাটি জাল, ঠেলা জালে ধরা পড়তে থাকে বোয়াল, শোল, গজার, ব্রিগেড, চিতল, রুই, কাতলা, কার্প, বাউশসহ নান প্রজাতির মাছ। এ দৃশ্য উপভোগ করতে গ্রামের নারী-শিশু থেকে শুরু করে সকলেই ভিড় করেন বিলের পাড়ে। এবার বিলে মাছের সংখ্যা বেশি। কম বেশি সবাইকে মাছ নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়।
গ্রামবাসি জানান, এটি তাদের দুইশত বছরের পুরো সংস্কৃতি। একে কেন্দ্র করে প্রতি বছর পূর্ব নির্ধারিত সময়ের কিছুদিন আগ থেকেই গ্রাম জুড়ে চলে উৎসবের আমেজ। যার যার মতো পলোসহ মাছ শিকারের নানা সরঞ্জাম সংগ্রহ করে প্রস্তুতি নেন শিকারীরা। উৎসবের দিন সকাল থেকেই শুরু হয় হাঁকডাক ও হইহুল্লোড়। পরে সবাই ছুটেন বিলের পাড়ে। শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি ও শলাপরামর্শ শেষে কমিটির অনুমতি পাওয়া মাত্রই বিলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন শিকারীরা। এসময় উৎসব উপভোগ করতে তীরে অবস্থান নেন সকল বয়সি মানুষ। উৎসব করতে দেশে ফেরেন প্রবাসীরাও।
এ বিষয়ে কথা হলে আয়োজক কমিটির সদস্য ইকবাল হোসাইন বলেন, পলো বাওয়া আমাদের পূর্ব পুরুষের পুরনো সংস্কৃতি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আমরা এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছি। এ উৎসব আমাদের পুুরো গ্রামবাসির মধ্যে এক অন্যরকম আবেগ-অনুভূতি আর ভালোলাগা কাজ করে।