৪ কমিশনের সংস্কার প্রতিবেদন : নানা সুপারিশ, ঐক্যমত্যে জোর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২:০০:২৪ অপরাহ্ন
প্রধান উপদেষ্টার হাতে ৪ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন
জালালাবাদ রিপোর্ট : চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এই চার সংস্কার কমিশন হলো সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন।বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংস্কার কমিশনের প্রধান ও অন্য সদস্যরা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।প্রতিবেদন হাতে পেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংস্কার প্রতিবেদন থেকে তৈরি হবে নতুন বাংলাদেশের চার্টার।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রস্তাবগুলো নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। আলোচনার মধ্য দিয়ে যেসব প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলছে। এর অংশ হিসেবে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।এর মধ্যে গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গঠন করা হয় নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন।
এর মধ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। বাকি চারটি কমিশনের প্রতিবেদন গতকাল জমা দেওয়া হলো।
সংবিধান সংস্কার :
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। আর প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ করার প্রস্তাবও করেছে কমিশন।
এছাড়া দ্বিকক্ষ-বিশিষ্ট আইনসভার প্রস্তাব করেছে কমিশন। এরমধ্যে একটি নি¤œকক্ষ বা জাতীয় সংসদ (ন্যাশনাল এসেম্বলি) এবং একটি উচ্চকক্ষ (সিনেট)। উভয় কক্ষের মেয়াদ হবে ৪ বছর।
কমিশনের সুপারিশগুলো এখানে তুলে ধরা হলো-
নিম্নকক্ষ :
১। নিম্নকক্ষ গঠিত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সরাসরি নির্বাচিত সদস্যদের সমন্বয়ে। ৪০০ (চারশো) আসন নিয়ে নি¤œকক্ষ গঠিত হবে। ৩০০ জন সদস্য একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। আরো ১০০ জন নারী সদস্য সারা দেশের সকল জেলা থেকে এই মর্মে নির্ধারিত ১০০ নির্বাচনী এলাকা থেকে কেবল নারী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন।
২। রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নকক্ষের মোট আসনের ন্যূনতম ১০% আসনে তরুণ-তরুণীদের মধ্য থেকে প্রার্থী মনোনীত করবে।
৩। সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ন্যূনতম বয়স কমিয়ে ২১ বছর করা হবে।
৪। দুইজন ডেপুটি স্পিকার থাকবেন, যাদের মধ্যে একজন বিরোধী দল থেকে মনোনীত হবেন।
৫। একজন সংসদ সদস্য একই সাথে নিম্নলিখিত যেকোনো একটির বেশি, পদে অধিষ্ঠিত হবেন না: (ক) প্রধানমন্ত্রী, (খ) সংসদনেতা, এবং (গ) রাজনৈতিক দলের প্রধান।
৬। অর্থবিল ব্যতীত নিম্নকক্ষের সদস্যদের তাদের মনোনয়নকারী দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
৭। আইনসভার স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতি সবসময় বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে মনোনীত হবেন।
উচ্চকক্ষ :
১। উচ্চকক্ষ মোট ১০৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে; এর মধ্যে ১০০ জন সদস্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রদত্ত মোট ভোটের সংখ্যানুপাতে নির্ধারিত হবেন। রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের মনোনয়ের জন্য সর্বোচ্চ ১০০ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। এই ১০০ জন প্রার্থীর মধ্যে কমপক্ষে
৫ জন আইন দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে – সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে। অবশিষ্ট ৫টি আসন পূরণের জন্য রাষ্ট্রপতি নাগরিকদের মধ্য থেকে (যারা কোনো কক্ষেরই সদস্য ও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন) প্রার্থী মনোনীত করবেন।
২। কোনো রাজনৈতিক দলকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বের যোগ্য হতে হলে- জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের অন্তত ১ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে।
৩। উচ্চকক্ষের স্পিকার সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন।
৪। উচ্চকক্ষের একজন ডেপুটি স্পিকার থাকবেন যিনি সরকার দলীয় সদস্য ব্যতিত উচ্চকক্ষের অন্য সকল সদস্যের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন।
এছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেই সঙ্গে গণতন্ত্র বহাল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন আরও চারটি মূলনীতির সুপারিশ করেছে তারা।
বর্তমানের চার মূলনীতির মধ্যে শুধু গণতন্ত্র রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ মূলনীতির মধ্যে। সুপারিশ করা নতুন পাঁচটি মূলনীতি হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র।সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এবং এ সংশ্লিষ্ট সংবিধানের ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
দুদক সংস্কার কমিশন
ইফতেখারুজ্জামানের নেতৃত্বে এ সংস্কার কমিশন গত ৩ অক্টোবর তার কার্যক্রম শুরু করে। রাজনীতি ও আমলানির্ভরতা কমিয়ে দুদককে শক্তিশালী করতে ৪৭ সুপারিশ করেছে এ কমিশন। ব্যক্তিগত স্বার্থে সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণা এবং আইনে কালো টাকা সাদা করার বৈধতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করারও সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন।
দুদককে শক্তিশালী, কার্যকর ও ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে কমিশনারদের পদ বাড়ানো, নিয়োগ, সার্চ কমিটি, আইনের সংস্কার, বেতন বৃদ্ধি ও প্রণোদনার জন্য সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশন বলছে, দেশে জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী কোনো কৌশল নেই। দুর্নীতি দমন শুধু দুদকের একার কাজ নয়, এখানে রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় অনেক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে। যেমন সংসদ, আইন ও বিচার বিভাগ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন কমিশন, ব্যবসা খাত ও রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী ভূমিকা থাকতে হবে। যে জাতীয় কৌশল প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে, তাতে রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নির্ধারণ করা থাকবে; যার মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেটি নিয়মিতভাবে নজরদারি করতে হবে।
রাজনীতি ও নির্বাচনসংক্রান্ত অর্থায়নে স্বচ্ছতার জন্য কিছু সুপারিশ করেছে কমিশন। তারা বলেছে, রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী আয়-ব্যয় নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। হলফনামার তথ্য প্রকাশ করতে হবে। যদি হলফনামায় পর্যাপ্ত তথ্য না থাকে, তথ্য গোপন করা হয় ও বৈধ আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ থাকে, তবে তার জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় থেকে জাতীয়-সব পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তাঁদের পরিবারের সবার সম্পদের বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেবেন।
দুর্নীতি দমনে সব সেবামূলক খাত স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেশনের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। দুদকে নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। দেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা বিবেচনায় যে ধরনের পেশাগত বৈচিত্র্য থাকা দরকার, সেটি নিশ্চিত করতে একজন নারীসহ ৫ জন দুদক কমিশনার নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁদের মেয়াদ হবে ৪ বছর। রাজনৈতিক বিবেচনায় দুদকে নিয়োগ বন্ধে সাত সদস্যের বাছাই কমিটি করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, পরে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তি যিনি রয়েছেন, তাঁকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাছাই কমিটির প্রধান করার কথা বলা হয়েছে। এরপর সদস্য হবেন হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ), সংসদ নেতার মনোনীত একজন, প্রধান বিরোধীদল থেকে মনোনীত একজন। এ ছাড়া একজন সরাসরি প্রধান বিচারপতি থেকে নিযুক্ত হবেন, যাঁর দুর্নীতিবিরোধী কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
দুদককে আমলাতন্ত্র মুক্ত করতে সচিব, মহাপরিচালক ও পরিচালক-পদগুলোতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
৪০% ভোট না পড়লে সংশ্লিষ্ট আসনে পুনর্নির্বাচন:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে সেই আসনে পুনর্র্নিবাচনের সুপারিশ করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। কমিশনের সুপারিশে নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আরও বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশনের সুপারিশের নির্বাচনী ব্যবস্থা অংশে রয়েছে-
ক. নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের বিধান বাতিল করা।
খ. নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা।
গ. কোনো আসনে মোট ভোটারের ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
ঘ. বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন বন্ধ করা, ‘না-ভোটে’র বিধান প্রবর্তন করা। নির্বাচনে না-ভোট বিজয়ী হলে সেই নির্বাচন বাতিল করা এবং পুনর্নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাতিল করা নির্বাচনে কোনো প্রার্থী নতুন নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারার বিধান করা।
এছাড়া কোনো দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না বলে প্রস্তাব করেছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন। উল্লেখযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আরো রয়েছে-
কোনো ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কোনো দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন নির্দলীয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া। ২০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হবে। দুইবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কেউ যেন রাষ্ট্রপতি না হন। একই সঙ্গে কেউ প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলীয় প্রধান পদে থাকতে পারবেন না। সংসদের উচ্চকক্ষ হবে সংখ্যানুপাতিক ভিত্তিতে। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ১৮টি উল্লেখযোগ্য জায়গায় ১৫০টির মতো সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশের অন্যতম লক্ষ্য- নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তাদের ক্ষমতায়িত করা। একই সাথে তাদের দায়বদ্ধ করা।
পুলিশ সংস্কার কমিশন :
বেআইনি সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের শক্তি প্রয়োগের সীমা নির্ধারণ, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার ও আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা চেয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।
এছাড়া বাহিনী সংস্কারের জন্য ২২টি আইনের সংশোধন ও পরিমার্জন চেয়েছে এই কমিশন। প্রতিবেদন জমা দেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। তিনি বলেছেন ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি পুলিশকে তিন হাজারের বেশি আইন নিয়ে কাজ করতে হয়।
সব আইন খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে এ ২২টি আইনের হয় সংশোধন, পরিমার্জন বা কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতে হবে। ওই ২২টি আইনের কোন কোন ক্ষেত্র আমাদের আপত্তি আছে, বলে দিয়েছি; বলে সুপারিশ করেছি আমরা।
সফর রাজ বলেছেন, ভিড় বা জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কিছু নিয়মকানুন আছে। এটার ব্যপারে আমরা কোন আইডিয়া দেইনি। ইউরোপের মডেলটাই ফলো করতে বলেছি। সেটার ব্যপারে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে ডিটেল একটা গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ ইউজ অব ফোর্স ৫টা স্তরে হবে। বেআইনি সমাবেশ, শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণে যে শক্তি প্রয়োগ করা হয়, এ শক্তি প্রয়োগটা পরিস্কার হয়ে যাবে। ক্রাউডের ক্ষেত্রে কী কী করতে হবে। ভবিষ্যতেও যদি কোন ঘটনা ঘটে কেউ প্রাণহানী হবে না।
প্রতিবেদনে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়েও সুপারিশ করেছে এই কমিশন।এছাড়া প্রতিটি থানায় নারী পুলিশের জন্য যেন একটি ডেস্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে।পুলিশ সংস্কারের জন্য সুপারিশ তৈরি করতে সাধারণ মানুষের মত নিয়েছিল কমিশনটি। সেই সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৮৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ এ বাহিনীকে ‘রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত’ করার ওপর জোর দেন।