স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৭:৩১:৪২ অপরাহ্ন
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, অন্ধত্বমুক্ত দেশ গড়তে ও সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের সমন্বিত প্রচেষ্টা। তিনি শনিবার বিকেলে সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে ‘বাংলাদেশ ইন সাইটঃ সিস্টেম লিডারশিপ এ্যাপ্রোচ টু আই হেলথ’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি আরোও বলেন, চক্ষু স্বাস্থ্য সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি অপরিহার্য অংশ। আমাদের দেশে এখনও অনেকেই মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত, বিশেষত চক্ষু সেবায় বাধার সম্মুখীন, যা অবহেলিত এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য আরো কঠিন। এই বাধা সমূহকে দূর করার জন্য চক্ষু সেবাকে সামগ্রিক স্বাস্থ্য সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ) নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। বাংলাদেশে চক্ষুস্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত করার জন্য এবং প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোগের পাশাপাশি সময় উপযোগী এমন একটি প্রকল্প, বিশেষ করে সিস্টেম লিডারশীপ এপ্রোচ এর ধারণার জন্য সাইটসেভার্স এবং দ্যা ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা আরো বলেন, আজ আমরা শুধু একটি প্রকল্প উদ্বোধন করছি না, বরং আমাদের দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা, মোকাবিলায় একটি পরিবর্তনমূলক পথ তৈরি করছি। বর্তমানে সরকার একটি পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে কাজ করে চলেছে এবং সরকারের অন্যান্য খাতের মতো স্বাস্থ্য খাতেও সমন্বিতভাবে কাজ করা অত্যন্ত জরুরী, যা এ প্রকল্পের মূলমন্ত্র।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশ ইন সাইট’ প্রকল্পের লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবার জন্য সহজলভ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই প্রকল্পটি একটি টেকসই এবং সমন্বিত পদ্ধতিতে চক্ষুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সিস্টেম পরিবর্তনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এটি বিভিন্ন খাতের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করবে, যাতে চক্ষুস্বাস্থ্যকে আর আলাদা না বরং এটি একটি বৃহত্তর স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়ন এজেন্ডার অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইও), বাংলাদেশে চক্ষুস্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে বিশেষ করে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব দূরিকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব মোহাঃ মনিরুল ইসলাম।
সাইটসেভার্স-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর, অমৃতা রেজিনা রোজারিও, তার স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্পটি সম্পর্কে বলেন- এটি প্রচলিত ধারণা বা কার্যক্রমকে অনুসরণ না করে একটি উদ্ভাবনী ও আন্তঃখাতের সমন্বয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রচলিত সিস্টেম হতে নেতৃত্ব তৈরিতে কাজ করবে। যার মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত সেবা খাতগুলোর বিদ্যমান সিস্টেমগুলিতে চক্ষুস্বাস্থ্যকে সুসংহত করে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে।
দি ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশনের ক্লাস্টার ডিরেক্টর, মোসাব্বির আলম বলেন, যারা স্বাস্থ্যসেবায় ন্যূনতম প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত, সেসব প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় প্রাথমিক চক্ষুস্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য, যেখানে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য। অন্যথায়, এ প্রকল্পের অর্জন বাধাগ্রস্থ হবে। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবার কল্যাণ, সমাজ সেবা, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মহিলা ও শিশু বিষয়কসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, এবং ইউএনডিপি, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় এনজিওর প্রতিনিধিগণ এবং, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।