ঔষধের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানো হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৯:১০:১৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ওষুধের ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন কালে এ কথা বলেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, ওষুধে খুব কম পরিমাণ ভ্যাট আরোপ করার কথা বলা হয়েছিল। আমরা সে সময়ই আপত্তি করেছিলাম। কিন্তু যিনি অর্থ উপদেষ্টা তিনি তো সারাদেশের আর্থিক বিষয়টা দেখেন। আমরা যখন দায়িত্ব নিলাম তখন ডলারের অনেক সংকট ছিল। আমাদেরকে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করতে হয়েছে। আগে আমরা দেখেছি আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আসলে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। তবে ওষুধের ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে আমার বিশ্বাস। কারণ আমরা কেবিনেটে এটা নিয়ে আলাপ করেছি।
তিনি বলেন, আমি এখনও জানি না সংস্কার কমিশন কি কি সংস্কারের প্রস্তাব দেবে। তবে যতটুকু জেনেছি আমাদের দিক থেকে আমরা তাদেরকে বলেছিলাম কিছু স্বল্পমেয়াদী সংস্কারের প্রস্তাব দিতে। যেগুলো আমরা করে ফেলতে পারি। কারণ আমাদের সময় বেশি না। এমন কিছু হয়তো আমরা করতে পারব না যেটা আমাদের সময়ে সম্ভব হবে না। তারপর মধ্যম মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদি সংস্কার প্রস্তাব থাকবে। তার মধ্য থেকে যে কয়টা আমরা করতে পারি সেগুলো করব। যেগুলো করতে পারব না আমরা সেগুলো স্ট্রং সুপারিশ করে রাখব পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্য সেক্টরে অনেক রকম দুর্নীতির চিত্র আমরা দেখছি। যেমন সিলেটে দুর্নীতি হয়েছে কি না বলব না। কিন্তু পরিকল্পনা করে কিছু হয়নি। কারণ এখানে একটি বিল্ডিং বানালাম কিন্তু সে বিল্ডিংয়ের সঙ্গে ম্যানপাওয়ার নেই। কিন্তু এই দুটি একযোগে হওয়ার কথা। সেটা না হলে হাসপাতাল চালু করা যাবে না। ময়মনসিংহে ২২টি বিল্ডিং হয়েছে কিন্তু হাসপাতাল হয়নি। হাসপাতালের জিনিসপত্র কেনায়ও অনেক গাফিলতি হয়েছে। আমরা যদি নিজেদের জায়গায় সৎ হই, সিস্টেমটাকে আমরা ডেভলপ করতে পারি, তাহলে দেখা যাবে সিস্টেমই দুর্নীতিকে নাকচ করে দেবে।
তিনি বলেন, আমি বলতে পারব না সব দুর্নীতি কয়েক দিনে বন্ধ করা যাবে। কিন্তু আমরা চেষ্টা শুরু করেছি। যেমন মন্ত্রণালয়ে আমরা তিনজন দালালকে ধরেছি। যারা পয়সা দিয়ে প্রমোশন দেওয়ার চেষ্টা করত। এই তিনজনকেই পুলিশে দিয়েছি। ঢাকা মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে আমাদের সহকর্মী যারা কাজ করেন তারা ফ্রি স্লিপ দিয়েছেন কিন্তু সেটাতে চিকিৎসা না দিয়ে ওষুধ না দিয়ে টাকা নিচ্ছে দুই-তিন হাজার করে। এটা শুনার পর লোক লাগিয়ে রাখলাম। এরপর তিনজনকে সাসপেন্ড করি।
জনবল সংকট নিয়ে তিনি বলেন, জনবলতো দিতে হবে। কিন্তু আমি কয়েক দিনেতো ডাক্তার, নার্স বানাতে পারব না। তাই এখন দেখব আমাদের টোটাল কী আছে। কাকে কতটুকু দিলে কাজ হবে। সিলেটে জেলা হাসপাতাল নিয়ে বলেন, কী করা যায় এটা নিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আমরা বলেছি তারা আমাদেরকে একটি প্রস্তাব দিক। কী হওয়া উচিত এটা নিরপেক্ষভাবে আমাদের প্রস্তাব দিলে সে অনুযায়ী কাজ করব।
ওসমানী হাসপাতালে বৃষ্টির পানি জমা নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি আজ এটা প্রথম শুনলাম। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি এটার কারণ চিহ্নিত করতে। সুরমা নদীর নাব্যতা নষ্ট হয়ে গেছে। খাল বিল যদি বন্ধ হয়ে যায়, এসব দখল করে যদি আমরা বিল্ডিং করে ফেলি তাহলেতো এমন হবে। এই সমস্যা সমাধানে যারা বিশেষজ্ঞ তারা তাদের সঙ্গে কথা বলুক।নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জানিয়ে দিয়েছেন ডিসেম্বর নাগাদ অথবা যদি আরও কিছু সংস্কার করতে সমর্থ হই তাহলে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাবে।
এর আগে সকালে তিনি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন এবং রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর উল্লেখ করে বিগত সময়ে নেওয়া নানা প্রকল্পের সমালোচনা করেন।