মৌলভীবাজারের মনু নদীতে বাঁধ সংস্কার চলমান আটকাতে তৎপর ত্রিপুরা, দিল্লীতে রিপোর্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : মৌলভীবাজার সীমান্তে মনু নদীর ওপরে বাংলাদেশের তরফে বাঁধের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। তবে বাঁধের কাজ আটকে দিতে তৎপর ভারত। এ নিয়ে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। যদিও বাংলাদেশের তরফে বলা হয়েছে, বাঁধ দিলে ভারতের কৈলাশহর ডুবে যাবে, এমন আশঙ্কার যৌক্তিক কোন কারণ নেই।
ত্রিপুরা সরকারের অভিযোগ যে সীমান্ত পিলারের খুব কাছেই বাঁধের জন্য মাটি ফেলে রাখা হয়েছে- যা দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী করা যায় না।
দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আগরতলায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে, উনকোটি জেলার কৈলাশহরের পাশে যেখানে বাঁধ নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে, সেই এলাকাটি সরেজমিনে দেখে এসেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তাদের রিপোর্টের সঙ্গেই উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি ইত্যাদি সব কিছুই তিনি দিল্লিতে জমা দিয়ে এসেছেন।
তার কথায়, এটা খুবই সিরিয়াস বিষয়। ওখানে যে সীমানা ফলক আছে, তার ৪০-৫০ মিটারের মধ্যেই বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। কোনভাবেই উচিত না এটা। এরফলে পুরো কৈলাশহরের দিকে জলপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে জল জমে যাবে। এটা কাম্য নয়।
মনু নদীর ওপরে কৈলাসহরের কাছে যে বাংলাদেশের তরফে নদী বাঁধ দেওয়া হচ্ছে, সেটা প্রথম ত্রিপুরা বিধানসভায় তোলেন কংগ্রেস বিধায়ক বীরজিত সিনহা।
তিনি বিবিসিকে জানিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশ তাদের অংশে মনু নদীর বাঁধ সংস্কার এবং উচ্চতা বাড়ানোর কাজ চালাচ্ছে এবং এর ফলে তার এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দেবে। সিনহা অবশ্য উল্লেখ করেছিলেন যে ওই মনু নদীতেই ভারতের দিকে যে বাঁধ আছে, সেটি সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে।
এই বাঁধ দুটি অবশ্য নদীর মাঝ বরাবর যে ড্যাম বা ব্যারাজ বানানো হয়, সেরকম নয়, নদী-পাড়ের ভাঙ্গন আটকাতে দেওয়া হয়েছে এই বাঁধ।
এরপরেই গত শুক্রবার ওই বাঁধের অঞ্চলটি পরিদর্শন করেন ত্রিপুরার জেলাশাসক। তার দেওয়া রিপোর্টই জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে।
তবে বাংলাদেশের তরফে বিবিসিকে আগেই জানানো হয়েছিল যে তারা কোনও বাঁধ নতুন করে বানাচ্ছে না, প্রায় ৪ দশকের পুরনো একটি বাঁধের সংস্কার করা হচ্ছে মাত্র।
বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহম্মদ খালেদ বিন অলীদ বিবিসিকে বলেন, ভারতের কৈলাশহর ডুবে যাবে, এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই বলে তিনি মনে করেন। তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে মনু নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজ ‘চলমান রয়েছে’।
তিনি বলেন, বাঁধটি আগে থেকেই ছিল। কিছু জায়গায় উঁচু নিচু ছিল। ডিজাইন অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় একেক লেভেলে, যতটুকু দরকার ততটুকু করছি। আবার তিনটা পয়েন্টে উনাদের বাধার জন্য আমরা কাজ করতে পারছি না।