জনবল সংকটে সিলেটের স্বাস্থ্যখাত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫০:২২ অপরাহ্ন
সাড়ে ১৪ হাজার পদের প্রায় ৬ হাজাই শূন্য
জালালাবাদ রিপোর্ট : ব্যাপক জনবলসংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সিলেটের স্বাস্থ্য খাত। সিলেট বিভাগে ৪০ শতাংশ পদে কোনো মানুষ নেই, যা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য খাতে শূন্য পদের এই তথ্য প্রকাশ করেছে ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য জনবল কৌশলপত্র ২০২৪’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই কৌশলপত্র তৈরি করেছে। সম্প্রতি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এই কৌশলপত্র প্রকাশ করা হয়।
এতে জানানো হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ে ৩২ শতাংশ পদ খালি। খালি পদের মোট সংখ্যা ৭৭ হাজার ৮৭৭। খালি পদের হার সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে। সিলেট বিভাগে পদ আছে ১৪ হাজার ৫৩৬টি, এর মধ্যে ৫ হাজার ৮২৭ পদে কোনো জনবল নেই। অর্থাৎ শূন্য পদ ৪০ শতাংশ। কৌশলপত্রে বলা হয়, জনবল যা আছে, তার বণ্টন ঠিকভাবে হচ্ছে না, বিভিন্ন শ্রেণির জনবলকে একসঙ্গে কাজ করানোর ক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা আছে, পেশার ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতির সুযোগ সীমিত, অনেকের কাজের চাপ বেশি। এগুলো স্বাস্থ্য খাতের দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যন্ত মোট ৩৩ শ্রেণির পদ আছে। এসব শ্রেণিতে মোট পদের সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭১১টি। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৪ পদে জনবল আছে। পদ খালি আছে ৭৭ হাজার ৮৭৭টি। অর্থাৎ স্বাস্থ্য খাতে শূন্য পদ ৩২ শতাংশ।
আট বিভাগের মধ্যে শূন্য পদের হার সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। এই বিভাগে পদ আছে ১৫ হাজার ৯৭৬টি। এর মধ্যে শূন্য পদ ৪ হাজার ২২৬টি। শূন্য পদ ২৬ শতাংশ। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শ্রেণিতে শূন্য পদের হার বেশি। এটি ৬২ শতাংশ। চিকিৎসকদের পদ খালি ৪০ শতাংশ। এছাড়া ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ৪০ শতাংশ পদে লোক নেই।শূন্য পদের কারণে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়তে হয় সেবা গ্রহণকারীকে, অর্থাৎ সাধারণ মানুষ বা রোগীকে। অন্যদিকে কাজের চাপ পড়ে অন্যদের ওপর অর্থাৎ যাঁরা কাজ করছেন। কৌশলপত্র বলছে, চিকিৎসকদের মধ্যে বাড়তি চাপ সবচেয়ে বেশি পড়ে মেডিসিন, শিশুস্বাস্থ্য, অবেদনবিদ, স্ত্রীরোগ ও শল্যচিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের ওপর। নার্সদেরও প্রবল চাপে থাকতে হয়, নার্সিং সেবার বাইরে তাঁদের অন্য কাজও করতে হয়।
কৌশলপত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বর্ধন জং রানার বার্তা ছাপা হয়েছে। তিনি বলেছেন, প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ মিলে মোট ৪৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীর একটি দল প্রয়োজন। এটিই বৈশ্বিক মানদ-। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য আছে ১৩ জন চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ।